logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

ছন্দের ইতিহাস ও উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে?


ছন্দের ইতিহাস ও উৎপত্তি

ছন্দের ইতিহাস ও উৎপত্তি বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভিন্নভাবে ঘটেছে। বাংলা ছন্দের উৎপত্তি ও বিকাশের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। নিচে বাংলা ছন্দের উৎপত্তি ও বিকাশের বিভিন্ন দিক এবং ইতিহাস আলোচনা করা হলো:

 

প্রাচীন যুগ

  • সংস্কৃত ছন্দের প্রভাব:
    • বাংলা ছন্দের উৎপত্তিতে সংস্কৃত ছন্দের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য, বিশেষ করে বেদ ও পুরাণে ব্যবহৃত ছন্দমালা বাংলা ছন্দের ভিত্তি তৈরি করেছে।
    • প্রাচীন কাব্যে ব্যবহৃত অনুপ্রাস, মাত্রাবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত এবং স্বরবৃত্ত ছন্দগুলি বাংলা কাব্যে প্রভাব ফেলেছে।

 

মধ্যযুগ

  • চর্যাপদ:
    • বাংলা ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য নিদর্শন হিসেবে পরিচিত "চর্যাপদ" (৮ম থেকে ১২শ শতক) মধ্যযুগের বাংলা ছন্দের প্রথম নিদর্শন। চর্যাপদের পদগুলোতে স্বরবৃত্ত ছন্দের সন্নিবেশ লক্ষ্য করা যায়।
    • চর্যাপদে ছন্দের ব্যবহার ছিল মূলত গানের ধাঁচে, যা পরবর্তীতে বাংলা কবিতার ছন্দমালায় গভীর প্রভাব ফেলেছে।
  • মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলী:
    • মধ্যযুগে মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলীতে ছন্দের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। এখানে মূলত মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত ছন্দের প্রয়োগ লক্ষণীয়।
    • মঙ্গলকাব্যের বর্ণনামূলক ও ধর্মীয় কাহিনীগুলি ছন্দে লেখা হতো, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল।

 

আধুনিক যুগ

  • মাইকেল মধুসূদন দত্ত:
    • মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা ছন্দে বিপ্লব এনেছিলেন। তিনি অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তন করেন, যা বিনা অন্ত্যমিলের ছন্দ হিসেবে পরিচিত।
    • তার "মেঘনাদ বধ কাব্য" বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্য, যেখানে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহৃত হয়েছে।
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর:
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ছন্দের ব্যবহার ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মাত্রাবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত, স্বরবৃত্ত এবং মুক্তছন্দ ব্যবহার করে বাংলা কবিতাকে সমৃদ্ধ করেছেন।
    • তার "গীতাঞ্জলি" সহ বিভিন্ন রচনায় ছন্দের বৈচিত্র্য ও সৃজনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়।
  • কাজী নজরুল ইসলাম:
    • কাজী নজরুল ইসলাম ছন্দের ব্যবহারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তিনি শ্যামা সংগীত, গজল এবং অন্যান্য ছন্দময় কবিতার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
    • তার বিদ্রোহী কবিতায় ছন্দের মাধ্যমে প্রতিবাদ ও শক্তির প্রকাশ লক্ষ্যণীয়।

 

পরবর্তী যুগ

  • আধুনিক ও সমকালীন কবি:
    • জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, শামসুর রাহমানসহ আধুনিক ও সমকালীন কবিরা ছন্দের নতুন রূপ ও বৈচিত্র্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।
    • তারা ছন্দের মাধ্যমে ব্যক্তিগত অনুভূতি, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন, যা আধুনিক বাংলা কবিতার বৈশিষ্ট্য।

 

উপসংহার

বাংলা ছন্দের ইতিহাস ও উৎপত্তি দীর্ঘ ও বহুমাত্রিক। প্রাচীন সংস্কৃত ছন্দ থেকে শুরু করে চর্যাপদ, মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলী, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলামের হাত ধরে বাংলা ছন্দের বিকাশ ঘটেছে। প্রতিটি যুগে কবিরা ছন্দের মাধ্যমে তাদের ভাব ও ভাবনা প্রকাশ করেছেন এবং নতুন নতুন ছন্দের ধাঁচ তৈরি করেছেন, যা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। ছন্দ বাংলা কবিতার প্রাণ, যা আজও পাঠক ও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখে।

 

ধন্যবাদ


Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment