গ্রামের ধান আর ভুট্টা ক্ষেতের আড়ালে মাটি গর্ত করে এক ইঁদুর বাস করত। তার আবার সখ্যতা ছিল এক শহরের ইঁদুরের সাথে। একদিন গ্রামের ইঁদুর তার শহুরে ইঁদুর বন্ধুকে তার বাড়িতে তার জন্মদিন উপলক্ষে নিমন্ত্রণ জানাল।
শহুরে ইঁদুর, ভীষণ খুশি মনে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে এল। কিন্তু খাবার দেখেই তার মুখ চুপসে গেল। রাশি রাশি ধান আর ভুট্টা! এ আবার কেমন খাবার রে বাবা! সে মুখে বলল না কিছুই, শুধু তার বন্ধুকে বলল- “একদিন আমাদের এলাকায় এসো, দেখবে ওখানে কত রকমের আইটেম আছে।”
কিছুদিন পড়, সেই গ্রামের ক্ষেতের ইঁদুরটি তার শহুরে বন্ধুর বাড়িতে গেল। গিয়েই সে দেখল, চারিদিকে দামি দামি খাবারের পশরা সাজানো। পিজ্জা, বার্গার, জ্যাম, জেলি, রুটি ইত্যাদি আরও কত কি! এই সব খাবারের ভাণ্ডার দেখে গ্রামের ইঁদুরটি অবাক হয়ে খাবারের দিকেই তাকিয়ে থাকল। এরকম খাবার খাওয়া তো দূর, সে কোনোদিনও চোখেও দেখেনি। সে নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করতে থাকে।
গ্রামের ক্ষেতের ইঁদুরটি শুধু ভাবছে, কখন খাওয়ার সময় হবে! কিছুক্ষণ পড় দুই বন্ধু মিলে খাবার খেতে বসল। গ্রামের ইঁদুরটি কিছুতেই বুঝতে পাড়ছে না, যে সে কোন খাবারটা খাবে আর কোন খাবারটা ছাড়বে। সে বারংবার তার দুর্ভাগ্যের কথা চিন্তা করে ব্যথিত হতে লাগল। সে ভাবত লাগল- “আমার ওখানে তো কিছুই নেই, সব সুখ তো এই শহরেই আছে।“
এবার তারা ও কয়েকজন অন্য ইঁদুর মিলে যেই না খাবার মুখে তুলতে যাবে, অমনি যেন কিসের শব্দ এল, সবাই দৌড় দিয়ে লুকিয়ে পড়ল। গ্রামের ইঁদুরটি দেখল, একজন লোক ঘড়ে আসছে। কিছুক্ষণ পড় লোকটি ঘড় থেকে চলে গেলে, সব ইঁদুররা মিলে আবার খাবারের কাছে এল, আবার যেই খাবার নিয়ে একটা কামড় দিয়েছে তেমনি একটা বেড়াল আসার আওয়াজ পেয়ে সবাই আবার দৌড়ে লুকিয়ে পড়ল।
এভাবেই চলতে লাগল, কখনো এক কামড়, কখনো দুই কামড় এভাবে কি খাবার খাওয়া যায় নাকি! বারংবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে গ্রামের সেই ইঁদুরটি বিরক্ত হয়ে তার বন্ধুকে বলল- “থাক বন্ধু আমার এমন সুস্বাদু দামি খাবারের দরকার নেই, যেই খাবার খেতে গেলে এত্ত ঝামেলা পোহাতে হয়। আমার এলাকায় এরকম দামি খাবার না থাকলেও, যা আছে তা খেতে গেলে আমাকে এরকম ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয় না। হতে পাড়ে আমার সেই খাবারে এই খাবার গুলির মত স্বাদ নেই, কিন্তু খাবার খাওয়ার সময় আমি শান্তিতে খেতে পাড়ি।
শিক্ষনীয় নীতিকথাঃ