logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

উত্তর আফ্রিকার আদিম কালের কোন সভ্যতা সম্পর্কে আপনি কী জানেন?


উত্তর আফ্রিকার আদিম কালের সভ্যতা

উত্তর আফ্রিকার আদিম কালের সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে মিশরীয় সভ্যতা (Ancient Egyptian Civilization) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী একটি উদাহরণ হিসেবে উঠে আসে। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা বিভিন্ন দিক থেকে বিশিষ্ট এবং মানব ইতিহাসে এর অবদান অপরিসীম। নিচে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য এবং দিক তুলে ধরা হলো:

১. ভূগোল এবং পরিবেশ

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা নীল নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। নীল নদ ছিল এই সভ্যতার প্রাণ, যা কৃষি, পানীয় জল, পরিবহন এবং বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নীল নদীর বার্ষিক বন্যা জমিকে উর্বর করত, যা কৃষির উন্নতির জন্য অত্যন্ত সহায়ক ছিল।

২. কৃষি এবং খাদ্য উৎপাদন

প্রাচীন মিশরীয়দের প্রধান অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল কৃষি। তারা গম, যব, ফ্ল্যাক্স ইত্যাদি শস্য উৎপাদন করত। নীল নদীর পানির সেচ ব্যবস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে তারা শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিল। কৃষিকাজ ছিল শ্রমিক এবং কৃষকের মাধ্যমে পরিচালিত।

৩. শাসনব্যবস্থা এবং রাজনীতি

মিশরীয় সভ্যতা একটি কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত হতো। ফারাও (Pharaoh) ছিল মিশরের সর্বোচ্চ শাসক এবং দেবতার প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচিত হতো। ফারাওয়ের অধীনে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তর ও কর্মকর্তারা কাজ করত।

৪. ধর্ম এবং আচার-অনুষ্ঠান

প্রাচীন মিশরীয়দের ধর্ম ছিল বহুদেবতাবাদী। রা (Ra), ওসিরিস (Osiris), আইসিস (Isis), এবং হোরাস (Horus) ছিল তাদের প্রধান দেবতা। মিশরীয় ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল মৃত্যুর পর জীবন, এবং মমি তৈরি ও পিরামিড নির্মাণ ছিল এই বিশ্বাসের অংশ।

৫. স্থাপত্য এবং পিরামিড

প্রাচীন মিশরীয়রা স্থাপত্যকলায় অত্যন্ত দক্ষ ছিল। তাদের নির্মিত পিরামিড, মন্দির এবং স্মৃতিস্তম্ভ আজও স্থাপত্যের বিস্ময় হিসেবে গণ্য হয়। গিজার মহা পিরামিড (Great Pyramid of Giza) এবং কার্নাক মন্দির (Karnak Temple) এর অন্যতম উদাহরণ।

৬. লিপি এবং সাহিত্য

প্রাচীন মিশরীয়রা হিয়েরোগ্লিফিক (Hieroglyphic) লিপি ব্যবহার করত, যা পাথর এবং প্যাপিরাসে (Papyrus) লিখিত হতো। তারা ধর্মীয়, প্রশাসনিক এবং সাহিত্যিক বিভিন্ন বিষয় লিপিবদ্ধ করেছিল। রোসেটা স্টোন (Rosetta Stone) হল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যা মিশরীয় হিয়েরোগ্লিফিক লিপির পাঠোদ্ধারে সহায়ক হয়েছে।

৭. বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি

প্রাচীন মিশরীয়রা জ্যামিতি, জ্যোতির্বিদ্যা এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতি করেছিল। তারা জ্যামিতির জ্ঞান ব্যবহার করে স্থাপত্যকর্মে দক্ষতা অর্জন করেছিল এবং জ্যোতির্বিদ্যার মাধ্যমে ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিল। চিকিৎসা বিজ্ঞানে তারা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ওষুধ ব্যবহার করত।

৮. শিল্পকলা এবং সংস্কৃতি

মিশরীয় শিল্পকলায় তাদের ধর্মীয় এবং দৈনন্দিন জীবনের প্রতিফলন দেখা যায়। তাদের চিত্রকলা, ভাস্কর্য, এবং কারুশিল্প অত্যন্ত উন্নত এবং বিস্তারিত ছিল। তারা বিভিন্ন ধাতু, পাথর এবং কাঠ ব্যবহার করে শিল্পকর্ম তৈরি করত।

৯. বাণিজ্য এবং যোগাযোগ

প্রাচীন মিশরীয়রা নীল নদ এবং ভূমধ্যসাগর ব্যবহার করে বাণিজ্য করত। তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল এবং বিভিন্ন পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করত।

১০. সামাজিক ব্যবস্থা

মিশরীয় সমাজ ছিল স্তরবিন্যাসমূলক। ফারাও শাসক হিসেবে সর্বোচ্চ স্থানে ছিলেন, তার পরে রাজকীয় পরিবার, যাজক, সামরিক কর্মকর্তা, এবং শ্রমিক-কৃষকরা ছিল। নারী ও পুরুষের মধ্যে কিছুটা সমতা থাকলেও সমাজে নারী ও পুরুষের ভূমিকা পৃথক ছিল।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা উত্তর আফ্রিকার আদিম কালের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ, যা মানব ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচিত হয়। এর বিভিন্ন দিক এবং বৈশিষ্ট্য আজও গবেষণার বিষয়বস্তু এবং বিস্ময় হিসেবে রয়ে গেছে।

 

-ধন্যবাদ


Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment