logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

নবজাগরণে বাংলা সাহিত্যের প্রভাব কী ছিল?


নবজাগরণে বাংলা সাহিত্যের প্রভাব

বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণ, যা ঊনবিংশ শতাব্দীতে শুরু হয়েছিল, একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক এবং সাহিত্যিক আন্দোলন ছিল যা বাংলা সাহিত্যকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এই সময়ে বাংলা সাহিত্য নতুন দিগন্তে প্রবেশ করে এবং সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিকশিত হয়। নবজাগরণে বাংলা সাহিত্যের প্রভাবের কিছু প্রধান দিক নিচে আলোচনা করা হলো:

১. শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তির প্রসার:

  • নবজাগরণ কালে শিক্ষার প্রসার ঘটতে শুরু করে। ইংরেজি শিক্ষা এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভাব বাংলার শিক্ষিত সমাজকে নবজাগরণের দিকে ধাবিত করে। বাংলা ভাষায় নানা ধরনের সাহিত্য রচনা হতে থাকে যা মানুষের চিন্তা ও মননশীলতাকে বিকশিত করে।

২. ধর্মীয় ও সামাজিক পুনর্জাগরণ:

  • রাজা রামমোহন রায়ের ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে হিন্দুধর্মের বিভিন্ন কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। এর ফলে ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, যা সাহিত্যেও প্রতিফলিত হয়। বাঙালি সমাজের প্রথাগত কুসংস্কার, বর্ণবৈষম্য এবং অন্যান্য সামাজিক সমস্যাগুলি সাহিত্যিকদের রচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পায়।

৩. নারী শিক্ষা ও নারী মুক্তি:

  • নবজাগরণের সময়ে নারী শিক্ষা ও নারী মুক্তির আন্দোলন জোরদার হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, কেশবচন্দ্র সেন প্রমুখ নেতারা নারী শিক্ষার প্রচলন ও বিধবা বিবাহের পক্ষে কাজ করেন। এর প্রভাব সাহিত্যেও পড়ে, এবং নারী চরিত্ররা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।

৪. সাংস্কৃতিক চেতনার উন্মেষ:

  • নবজাগরণ কালে বাঙালি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন ঘটে। সাহিত্যিকরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও স্বাদেশিক চেতনা প্রকাশের জন্য সাহিত্যকে ব্যবহার করেন। এই সময়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে গুরুত্ব আরোপ করা হয় এবং বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি একটি গর্ববোধ সৃষ্টি হয়।

৫. প্রবন্ধ ও সমালোচনা সাহিত্য:

  • নবজাগরণের সময়ে প্রবন্ধ এবং সমালোচনা সাহিত্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীতে প্রবন্ধ, আলোচনা ও সমালোচনা প্রকাশিত হতে থাকে। এর ফলে নতুন চিন্তাধারা ও তত্ত্বের বিস্তার ঘটে।

৬. উপন্যাস ও ছোটগল্পের বিকাশ:

  • এই সময়ে বাংলা উপন্যাস এবং ছোটগল্পে নতুন ধারা সৃষ্টি হয়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকরা বাংলা সাহিত্যে উপন্যাস ও ছোটগল্পের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা, মানুষের জীবনযাত্রা এবং আবেগের জটিলতা তুলে ধরেন।

৭. পশ্চিমা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রভাব:

  • পাশ্চাত্য সাহিত্য এবং সংস্কৃতি নবজাগরণের সময়ে বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। শেক্সপিয়ার, মিলটন, বাইরন, শেলি প্রমুখ ইংরেজি কবি এবং লেখকদের রচনা বাংলা ভাষায় অনুবাদ হতে থাকে এবং তাদের প্রভাব বাঙালি সাহিত্যিকদের রচনায় দেখা যায়।

৮. বিজ্ঞানের প্রভাব:

  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি বাংলা সাহিত্যেও প্রতিফলিত হয়। বাংলা সাহিত্যে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাস রচিত হতে থাকে, যা মানুষের বিজ্ঞানমনস্কতা এবং বিজ্ঞান সচেতনতা বৃদ্ধি করে।

নবজাগরণ কালের বাংলা সাহিত্য নতুন ধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির উন্মেষ ঘটায় এবং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির অভ্যুদয়কে ত্বরান্বিত করে। এই সময়ে সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিক এবং মানবজীবনের জটিলতাগুলি তুলে ধরা হয়, যা আজও প্রাসঙ্গিক।

 

-ধন্যবাদ

Popular Post:

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment