logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. IAS Accredited An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0004054

What is Internet? (ইন্টারনেট কি)


About Internet

বর্তমান যুগে সবচেয়ে অতি পরিচিত একটি শব্দ হচ্ছে ইন্টারনেট৷ ইন্টারনেটের নাম শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা নেই বললেই চলে৷ ছোট থেকে বৃদ্ধ সবাই কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে৷ কেউ হয়ত কাজের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করছে আবার কেউ হয়তোবা অবসর সময় বিনোদনের জন্য ইন্টারনেটের সংস্পর্শে রয়েছে৷ বর্তমান মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এক অনন্য ও অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ হচ্ছে ইন্টারনেট৷ আমাদের জীবনের পথে কাজের গতিকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়ে এখন নতুনত্ব রূপ দিয়েছে এই ইন্টারনেট৷ জীবনকে গড়ে তুলেছে অতীবসহজময়, সুন্দর ও এক বিশ্বস্ত বন্ধু রূপে প্রতীয়মান হয়ে উঠেছে৷ ইন্টারনেট আস্তে আস্তে আমাদের এই মানব জীবনের জন্য এক আশীর্বাদ রূপে পরিচালিত হয়েছে৷ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য নিঃশ্বাস যতটা দামি ঠিক তেমনি ইন্টারনেট ছাড়া মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এক একটি মুহূর্ত কাটানো বেশ কষ্টদায়ক ও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ পুরো পৃথিবীর মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে এই ইন্টারনেট৷ ইন্টারনেট কেবলমাত্র একটি শব্দ নয় জীবনে বেঁচে থাকার আরেকটি নাম৷ দৈনন্দিন জীবনে নানা ক্ষেত্রে বেশ দাপটের সঙ্গে প্রভাব বিস্তার করেছে ইন্টারনেট, শিক্ষা ক্ষেত্রেও তার অবদান অনস্বীকার্য৷ ইন্টারনেট কোন নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়, ইন্টারনেট পৌঁছে গিয়েছে আজ প্রত্যেকটি মানুষের ঘরে ঘরে, অফিসে, কর্মক্ষেত্রে, মোবাইলের মাধ্যমে সবার হাতে হাতে৷ বর্তমানে এর চাহিদা মারাত্মক কেননা, মানুষ আজকাল না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, বিনা বিদ্যুৎ সেবায় থাকতে পারবে কিন্তু, ইন্টারনেট ছাড়া অসম্ভব৷ বর্তমান আধুনিক ডিজিটাল দুনিয়ায় ইন্টারনেট ছাড়া যে কোন কল্পনাই অসম্পূর্ণ৷ তাই চোখ বন্ধ করে একটা কথা না বললেই নয়, যে বর্তমান বিশ্বে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে ইন্টারনেটের গুরুত্ব বা অবদান অনস্বীকার্য৷ সত্যি বললে ইন্টারনেট ছাড়া মানুষ অচল৷

আপনি কি জানতে চান দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে ব্যবহৃত ও গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারনেট সম্পর্কে! তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

     ইন্টারনেট কি?  মানবজীবনে এর গুরুত্ব কী? ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি খুঁটিনাটি সমস্ত বিষয় জানার আগে চলুন জেনে নেই ইন্টারনেটের আদি ইতিহাস সম্পর্কে কিভাবে ইন্টারনেট আবিষ্কার হয়েছে সেই ব্যাপারে ?

ইন্টারনেটের ইতিহাস :- 
মাকড়সার জালের মত আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা দৈনন্দিন জীবনের এক অন্যতম অংশ হচ্ছে ইন্টারনেট৷ একবার এই জায়গায় আটকে গেলে এখান থেকে বের হওয়া অসম্ভব একটি ব্যাপার৷ ইন্টারনেট এমন এক ধরনের প্রযুক্তি যা প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট কোন একজন ব্যক্তির দ্বারা আবিষ্কার হয়নি৷ এমনকি রাতারাতিও আবিষ্কার হয়নি এই ইন্টারনেট৷ এই ইন্টারনেট আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে অসংখ্য মানুষের দিন-রাত রক্ত বেচা পরিশ্রম৷ অর্থাৎ বিভিন্ন বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও গবেষকদের নিরলস পরিশ্রমের ফলশ্রুতি হলো আজকের এই বিশাল ইন্টারনেট পরিষেবা৷ অস্ত্র রূপে পুরো পৃথিবীতে রাজ করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে ইন্টারনেটকে৷


 ইন্টারনেটের সূচনা কিভাবে হয়েছে অথবা এর আবিষ্কার কিভাবে হয়েছে চলুন একটু সেই সম্পর্কে জেনে নিন৷ ১৯৫০ সালে প্রথম ইন্টারনেটের ইতিহাস শুরু হয় ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে৷ ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সর্বপ্রথম Leonard Klein Rock সেনাদের দ্রুত বার্তা পৌঁছানোর জন্য এই ধরনের technique মাথায় আসে৷ ১৯৫৭ সালে ৪ই অক্টোবর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট আবিষ্কার করেন; যার নাম হচ্ছে "স্পুটনিক৷"
১৯৬২ সালে MIT এর JCR লাইক রিডার সর্বপ্রথম বর্ণনা করেন গ্যালাকটিক নেটওয়ার্ক কনসেপ্টের৷ তখন বিভিন্ন কম্পিউটারের মধ্যে program and data এর আদান-প্রদানের পদ্ধতির সম্পর্কে বলা হয়৷


১৯৬৪ সালে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ লিওনার্ড ক্লেইনরক এক গবেষণায় সার্কিট এর পরিবর্তে প্যাকেটস সুইচিং নেটওয়ার্কের কথা বলেন৷           ইন্টারনেট সৃষ্টির একটি প্রাথমিক কারণ হচ্ছে সামরিক৷ বিশ্বের দুই পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তীব্র স্নায়ুযুদ্ধের কারণে দুই পরাশক্তির সমরবিশারদরা শঙ্কিত ছিল পারমাণবিক বোমার ভয়ে৷ তাদের মধ্যে সর্বদা এই আতঙ্ক বাসা বেঁধে থাকতো যে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ফলে সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার হাত থেকে বাঁচতে টেলিফোনের বিকল্প ব্যবস্থা মাথায় আসে তারই ফলস্বরূপ হচ্ছে ইন্টারনেট৷

১৯৬৯ সালে মার্কিন সামরিক সংস্থা বিশ্বব্যাপী নিজেদের অবস্থান গুলোর সাথে সর্বদা গোপন যোগাযোগ স্থাপনের জন্য প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহার করেছিল৷          প্রতিরক্ষা বিভাগের "Advance Research Project Agency " অধিকর্তা বব টেইলর এই নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেন৷ তারপর ৪ টি কম্পিউটারের মাধ্যমে information আদান - প্রদান করে টেলিফোনের বিকল্প হিসেবে পেন্টাগন এই যোগাযোগ ব্যবস্থার নাম দেন "ডার্পানেট৷" এরপর এই 'ডার্পানেট' নাম পরিবর্তন করে এক নতুন নাম দেন 'আর্পানেট'৷ আর কম্পিউটারের সংখ্যা ৪ টির থেকে বেড়ে হয় ৩৩ টি৷ তারপর ষাটের দশকের শেষে সময় বিভিন্ন প্যাকেট সুইচিং নেটওয়ার্ক চালু করেন৷ যেমন - মেরিট নেটওয়ার্ক, টিম নেট , টেলনেট, এনপিত্রল , মার্ক, সিক্লিডিস ইত্যাদি৷

১৯৭০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রোগ্রামের রেমন্ড স্যামুয়েল টমলিনসন তৈরি করে একটি E-mail System.
১৯৭১ সালে বানানো হয় আর্পানেট এর উপযোগী Email System.
১৯৭২ সালে প্রথম @ এই চিহ্নকে email address এ ব্যবহার করা হয়৷
১৯৭৩ সালে ২৫ শে জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের আর্পানেট যোগাযোগ স্থাপিত হয়৷ আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক যোগাযোগ এটি ছিল প্রথম৷  তারপর রবার্ট কান আর ভিন্টন সার্ফ আবিষ্কার করেন TCP অর্থাৎ, ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল এবং IP অর্থাৎ, ইন্টারনেট প্রটোকল৷
১৯৭৫ সালে স্ট্যান্ডফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের মধ্যে TCP/ IP পরীক্ষা হয়৷ তার দু'বছর পর যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্য এই তিনটি নেটওয়ার্কে TCP/IP এর যোগাযোগ স্থাপনের পরীক্ষা হয়৷                                  
১৯৮০ এর দশকে TCP/IP ইন্টারনেটে সার্বজনীন ভাষায় রূপান্তরিত হয়৷ তারপর আরো বেশ কয়েকটি নেটওয়ার্ক চালু হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বিটনেট৷ যার মধ্যে প্রায় অর্ধশত দেশের হাজারো বেশি প্রতিষ্ঠা এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ছিল৷
১৯৮০ সালে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার টিম বার্নস লি একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের কথা চিন্তা করেন যা কিনা মানুষের ব্রেইন এর মত কাজ করবে এবং তিনি ওই সফটওয়্যার এর নাম দেন হাইপার টেক্সট৷ এবং কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট ইনফরমেশন গুলোকে একে-অপরের সঙ্গে কানেক্ট করে দেন৷
এরপর HIML অর্থাৎ, হাইপার টেক্সট মার্ক ল্যাঙ্গুয়েজ নামক একটি বিশেষ কোডিং সিস্টেম আবিষ্কার করেন৷ যার ফলে গড়ে ওঠে একাধিক তথ্যের যোগসুত্র যা কিনা পরবর্তীতে পরিচিত হয় হাইপার টেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল নামে৷ 
ভিন্ট সার্ফ ও রবার্ট কর্নের বানানো TCP ও IP অ্যাড্রেস এর সাহায্যে বিভিন্ন কমিউনিকেশন HTTP বা FTP পরিচালিত হয়৷ বড় মেইনফ্রেম কম্পিউটার বা সার্ভারের নানান ফাইল এক্সেস করবার জন্য বড় বড় নাম্বারের মতো IP অ্যাড্রেস ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ নাম্বারের সংখ্যা অনেক বেশি থাকার মনে রাখা বিশেষ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় আর এই কষ্ট দূর করার জন্য এক নতুন system তৈরি করা হয় যার নাম দেওয়া হয় ডোমেইন নেম সিস্টেম (DNS)
১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের national science foundation নামে সর্বসাধারণের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করেন যা ছিল কেবল গবেষণার কাজে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যম৷ কিন্তু ধীরে ধীরে তা পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে গড়ে ওঠে ছোট-বড় অসংখ্য নেটওয়ার্ক৷ বেশ উন্নয়ন ঘটে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক বিনিয়োগকারী আকর্ষণের ক্ষমতা অর্জন করে ইন্টারনেট৷
১৯৮৮ সালে প্রাথমিক যুগের ইন্টারনেট আন্তর্জাতিক রূপে পরিচিতি লাভ করে৷ এনএসএফনেটের যোগাযোগের সঙ্গে মিলিত হয় কানাডা, ফ্রান্স, সুইডেন, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্ক৷
১৯৮৯ সালে (www) ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আবিষ্কার করেন সুইডিশ বিজ্ঞানী টিম বার্নস লি। যার ফলে ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি পেয়ে সেকেন্ডে ৪৫ মেগাবিটস গতিতে চলে৷
১৯৯০ সালে ইন্টারনেটের বহুমুখী ব্যবহার চালু হয়৷ যেমন- ইলেকট্রনিক মেইল, ভিডিও কল, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিং, ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল ফোন কল, নানান ইন্টারনেট ফোরাম, অনলাইন কেনা-বেচা ইত্যাদি ওয়েবসাইট তৈরি হয়৷ 
১৯৯২ সালে ২২ শে সেপ্টেম্বর থেকে ইন্টারনেট ব্যবস্থা পুরো ইউরোপ জুড়ে শুরু হয়৷
১৯৯৩ সালে এপ্রিলে প্রথম 'মোজাইক ' নামে একটি ওয়েব ব্রাউজার চালু হয় উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এ ৷ আস্তে আস্তে এর অগ্রগতি বাড়তেই থাকে৷
১৯৯৪ সালে 'অ্যামাজন' প্রতিষ্ঠা করেন জেফ বেজজ৷ যার দ্বারা ই-কমার্সের নতুন দুনিয়ার সূত্রপাত ঘটে৷
১৯৯৬ সালে চালু হয় বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা৷
১৯৯৮ সালে প্রথম গুগলে অফিস চালু হয়৷
২০০১ সালে জিমি ওয়েলস ও ল্যারি স্যাংগার আবিষ্কার করেন ঊইকিপিডিয়া যা কিনা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনসাইক্লোপিডিয়া৷
২০০৪ সালে ডিসেম্বরে মার্ক জুকারবার্গ আবিষ্কার করেন ফেসবুক৷ আর এই ফেসবুকের মাধ্যমেই পৃথিবীতে নিয়ে আসে সামাজিক যোগাযোগের এক যুগান্তকারী পরিবর্তন৷
২০০৭ সালে মোবাইল স্মার্টফোন প্রযুক্তি অনেক দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়৷
২০১০ সালে 4G নেটওয়ার্ক চালু করা হয়৷ইনস্টাগ্রাম তৈরি হয় তখন এবং রেজিস্টার্ড ডোমেইনের সংখ্যা তখন ২০০ মিলিয়ন এ দাঁড়ায়৷ একই সালে নভোচারী টি. জে. ক্রিমার মহাকাশ থেকে প্রথম টুইট বার্তা পাঠিয়ে সফল হয়৷
২০১১ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২বিলিয়নে দাঁড়ায়৷
২০১২ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২.৪ বিলিয়ন পার করে৷
২০২০ তে ৪.৫ বিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা৷
২০২২ এ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে কারণ বর্তমানে ইন্টারনেট ছাড়া আমাদের জীবন অন্ধকার মনে হয়৷

এবার চলে আসি আমরা আমাদের মূল টপিক ইন্টারনেট কী সেই বিষয়ে !
ইন্টারনেট কাকে বলে?
ইন্টারনেট হচ্ছে এক ধরনের জাল৷ দুই বা ততধিক কম্পিউটার একে-অপরের সাথে সংযুক্ত  হওয়াকেই এক কথায় ইন্টারনেট বলে৷
একটি আধুনিক প্রযুক্তি হচ্ছে ইন্টারনেট৷ কম্পিউটারে থাকা প্রটোকলের মাধ্যমে সব কম্পিউটার গুলো একত্রে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়৷ 
প্রত্যেকটি কম্পিউটারে ভিন্ন ভিন্ন IP অ্যাড্রেস থাকায় ইন্টারনেটে কোনো নির্দিষ্ট লোকেশন, IP  অ্যাড্রেস এর সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক প্রবেশ করার পর নির্দিষ্ট কম্পিউটারটি অন্যদের ডাটা শেয়ার ও রিসিভ করতে পারে৷
সহজ ভাষায়, একাধিক কম্পিউটার যখন ইন্টারনেট প্রটোকলের সাহায্যে কোন নেটওয়ার্কের দ্বারা একত্রে যোগাযোগ তৈরি করে তখন সেই কানেকশন বা নেটওয়ার্ক টিকেই ইন্টারনেট বলে৷

ইন্টারনেট কথাটির অর্থ কি ?
ইথারনেট শব্দ থেকে উৎপত্তি হয় ইন্টারনেট শব্দটির৷ এর বাংলা অর্থ হল অন্তর্জাল৷ যার মাধ্যমে দুইয়ের বেশি কম্পিউটার একত্রে সংযুক্ত করা হয়৷ লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার একসঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কানেক্ট হতে পারে বলে এটিকে 'মহাজাল' বলেও আখ্যা দেওয়া হয়৷

ইন্টারনেট আবিষ্কারক কে? অথবা ইন্টারনেটের জনক কাকে বলা হয় ?
আমি প্রথমেই বলেছি ইন্টারনেট কোনো একজন ব্যক্তি অথবা রাতারাতিও সৃষ্টি হয়নি৷ এর পেছনে রয়েছে অসংখ্য মানুষের অবদান৷ তবে, vint cerf ও Bob kahn এই দু-জন ব্যাক্তি TCP (Transmission Control protocol), IP (Internet protocol) ইন্টারনেটের এই দুটি সবচেয়ে মূলবান জিনিস আবিস্কার করেছিলেন বলে তাদের ইন্টারনেটের জনক বলা হয়৷ কারণ, প্রটোকল ছাড়া একাধিক কম্পিউটারের যোগাযোগ অসম্ভব৷

ইন্টারনেটের প্রথম ওয়েবসাইট কোনটি?

Berners Lee ১৯৯১ খ্রি: ৬ আগস্ট সর্বপ্রথম একটি website তৈরি করেন৷ website টি হল - http://info.Cern.ch/hyper text/www/The project.html. এটি ইন্টারনেটে live আছে আজকের দিনেও৷

ইন্টারনেট কত প্রকার ও কী কী?
এবার জানবো ইন্টারনেটের প্রকারভেদ সম্পর্কে৷ আগে যা কাজ করতে দিনের পর দিন ব্যয় হত তা আজকে এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই ঘরে বসে অনায়াসে করতে পারা যায়৷ এই ইন্টারনেট প্রাণচাঞ্চল্য ও গতিময় করে তুলেছে আমাদের এই মানব জীবনকে৷ ইন্টারনেটকে সাধারণত ৬টি ভাগে ভাগ করা যায়৷ যথা-
ডায়াল-আপ
ডিএসএল
স্যাটেলাইট
ক্যাবল
ওয়ারলেস
সেলুলার
ইন্টারনেটে এই ৬টি ভাগ সম্পর্কের নিম্নে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো-

  1. ডায়াল-আপ :- স্ট্যান্ডার্ট ফোন লাইন থেকে যে ধরনের ইন্টারনেট কানেকশন পাওয়া যায় তাকে সাধারণত বলা হয় ডায়াল-আপ ইন্টারনেট৷
    ১০ সেকেন্ডের মধ্যে মোবাইল কানেকশন সংযুক্ত করে এই ডায়াল-আপ ইন্টারনেট প্রক্রিয়া৷ যা সবার কাছে কমফোর্টেবল নয়৷
  2. ডিএসএল :- ডায়াল-আপ ইন্টারনেট একটু ধীর গতিসম্পন্ন বলে এটি তেমন কমফোর্টেবল মনে হয়না সবার কাছে৷ তাই তৈরি করা হয়েছে ডিএসএল যা মূলত ক্যাবল কানেকশন৷ এটি ডায়াল-আপ থেকে ১০০ গুণ গতি সম্পূর্ণ৷এবং এটি সবার কাছে কমফোর্টেবলও৷
  3. স্যাটেলাইট :- স্যাটেলাইট হচ্ছে দ্রুত গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশন৷ স্যাটেলাইট কানেকশন ইন্টারনেট দুনিয়ায় দ্রুততম পরিষেবা দেওয়ার একটি অন্যতম মাধ্যম৷
  4. ক্যাবল :- ব্রডব্যান্ড লাইনে সহজে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট কানেকশন দেওয়ার একটি মাধ্যম হচ্ছে এই ক্যাবল৷ বর্তমানে এটি বেশ জনপ্রিয় এবং প্রচলিত একটি মাধ্যম৷ এবং গতি অন্যান্য মাধ্যম গুলি থেকে অনেকটাই বেশি৷
  5. ওয়ারলেস :- দুটি মাধ্যম কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থান করে একটি অন্যটির মধ্যে সংযোগ স্থাপনের সাহায্যে তথ্য আদান-প্রদান করা হয় তাকেই ওয়ারলেস কানেকশন বলা হয়৷
  6. সেলুলার :- সেলুলার হচ্ছে মোবাইল ফোনে ব্যবহারকারী ইন্টারনেট কানেকশন৷ খুবই জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে সেলুলার যা আমরা রোজই ব্যবহার করে থাকি৷

ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা :-

ইন্টারনেটের সুবিধা অসংখ্য কেননা এর চাহিদা মারাত্মক বর্তমান বিশ্বে৷ ইন্টারনেট ছাড়া জীবন অন্ধকারাচ্ছন্ন সে কাজের ক্ষেত্রে হোক বা শিক্ষা ক্ষেত্রে অথবা বিনোদনের জন্যেও সর্বত্রই দরকার হয় ইন্টারনেটের৷ ইন্টারনেটের অনেক সুবিধা লক্ষ্য করা যায়৷ সেগুলি হল যথা-

  1. খুব অল্প সময় যে কোন মানুষের সঙ্গে ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়৷
  2. ঘরে বসে ইচ্ছে স্বাধীন ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রচুর অর্থ ইনকাম করা যায়৷
  3. আপনার বিজনেসকে বাড়িতে বসেই ম্যানেজ করার সুবিধা পাওয়া যায়৷
  4. ইন্টারনেটের মাধ্যমে রেল বা বিমানের টিকিট বুক করে রাখতে পারবেন৷
  5. ইন্টারনেটের দ্বারা সিনেমা দেখা, অনলাইনে পণ্য কেনা ইত্যাদি কিছু করা যায়৷
  6. Song শুনতে ও ডাউনলোড করতে পারবেন৷
  7. মেসেজ বা চ্যাট করে কোন ব্যক্তির সাথে কথাবার্তা বলতে পারবেন ইন্টারনেটের সাহায্যে৷
  8. video Calling করতে পারবেন৷
  9. একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছাতে লোকেশন দেখতে ইন্টারনেট সাহায্য করে থাকে৷
  10. ইন্টারনেটের সাহায্যে ইমেইল পাঠানো যায়৷
  11. ইন্টারনেটে সবথেকে বড় সুবিধা হল সে দিন হোক বা রাত এটি সর্বদাই উপলব্ধ৷
  12. ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন গবেষণা সংক্রান্ত নিত্যনতুন অনেক ইনফরমেশন খুব সহজেই পাওয়া যায়৷
  13. ইন্টারনেটে প্রশ্ন লিখে সহজে সরাসরি উত্তর পাওয়া যায়৷
  14. বিভিন্ন অনলাইন লাইব্রেরী থেকে মূল গ্রন্থ কপি পাওয়া যায়৷
  15. ইনফরমেশন বিনিময়ের দ্রুততম ও সর্বোত্তম উপায় ইত্যাদি৷

ইন্টারনেটের অসুবিধা :- 
সবক্ষেত্রেই ভালো গুণাগুণের পাশাপাশি খারাপ কিছু গুণও থাকে এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও লক্ষ্য করা যায়৷ যথা-

  1. ইন্টারনেটের ফলে সমগ্র গ্রন্থ পাঠের অভ্যাস নষ্ট হয়৷
  2. সবই এর E সংস্করণ মিলে না৷ নিলেও তা বেশ ব্যয় সাপেক্ষ৷
  3. আজকাল ইন্টারনেটকে অনেক মানুষ ভুল ভাবে পরিচালিত করছে অর্থাৎ কেউ কেউ নিজস্ব মনগড়া ভুল ইনফরমেশন আপলোড করছে তা ব্যবহার করতে গিয়ে পাঠক-পাঠকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে৷
  4. অনেক সময় গবেষণার কাজ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ইনফরমেশন ইন্টারনেটে পাওয়া যায় না৷
  5. ইন্টারনেট আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে৷ কেননা সারাদিন চোখের সামনে মোবাইল এবং কম্পিউটার স্ক্রিন দেখে চোখের অনেক রোগ সম্ভাবনা দেখা যায়৷
  6. অত্যাধিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের স্থূলত্বের শিকার হতে হয়৷
  7. ইন্টারনেটের সাহায্যে হ্যাকিং, শিপিং, ফিশিং, অনুপ্রবেশ, সাইবার ক্রাইম ইত্যাদি করা যায়৷
  8. প্রতারণার শিকারও মাঝে মাঝে হবার সম্ভাবনা দেখা যায়৷
  9.  আমরা ইন্টারনেট বলতে বুঝে থাকি সমগ্র ইন্টারনেট এর মাত্রা 5% বাকি 95% ডার্ক ওয়েব৷ ইত্যাদি৷

ইন্টারনেটের ব্যবহার :- জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে যেমন স্কুল, কলেজ, অফিস,ব্যাংক ইত্যাদি কোন না কোন ভাবে ইন্টারনেটের সাথে মিলিত রয়েছে৷ ইন্টারনেট জীবনের অতি প্রয়োজনীয় একটি অংশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে৷ 
চলুন দেখে নেই আমরা কোন কোন উপায় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি -

  1. E-mail 
  2. সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং যেমন facebook, twitter ইত্যাদি ক্ষেত্রে৷
  3. গবেষণা করতে
  4. ই-বুক এবং অনলাইন ম্যাগাজিন 
  5. খবর
  6. অনলাইন ব্যাংকিং
  7. ই-কমার্স
  8. টিকিট বুকিং
  9. ডাউনলোড ফাইল
  10. অনলাইন গেম
  11. অনলাইন ভিডিও, সিনেমা দেখতে
  12. চাকরি খুঁজতে
  13. ফ্রিল্যান্সিং
  14. অনলাইন পড়াশোনা
  15. অনলাইনে স্বাস্থ্য সচেতনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইন্টারনেটকে কাজে লাগাতে পারি। 

শেষ বক্তব্য, 
                ইন্টারনেট সমগ্র বিশ্বে এক অদ্ভুত বিপ্লব ঘটিয়েছে৷ ইন্টারনেট একটি কম্প্যাক্ট ওয়ার্ল্ড যা ভৌগলিক গন্ডি পেরিয়ে সমগ্র পৃথিবীর মানুষের নখদর্পণে নিয়ে এসেছে৷ তাই ইন্টারনেটকে ভুল কাজে ব্যবহার না করে এই প্রযুক্তিটি ইতিবাচক কাজে ব্যবহার করা উচিত৷ তাহলে এই পৃথিবী আরো সুন্দর সহজ হয়ে উঠতে পারবে৷ এবং দিনে দিনে এ সফলতা আকাশ ছোঁবে৷

Popular Post:

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment