logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি!


দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা

আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনসভার গঠন এককক্ষবিশিষ্ট হবে, নাকি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট , তা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। বেন্থাম, আবে সিঁয়ে, ল্যাস্কি, ফ্রাংকলিন প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিরোধিতা করে এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে যুক্তি অবতারণা করেন। 

অন্যদিকে লর্ড ব্রাইস, স্টূয়ার্ট মিল, লেকি হেনরি মেইন, লর্ড অ্যাকটন, গেটেল প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার কোঠর সমালোচলা করে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে জোরালো যুক্তি দেখিয়েছেন।

>> পক্ষে যুক্তি

১) সুচিন্তিত আইন প্রণয়নঃ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় সুচিন্তিতভাবে আইন প্রণীত হয়। আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হওয়ায় প্রতিটি বিলকে দুটি কক্ষে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচারবিবেচনা করার সুযোগ পাওয়া যায়। এতে বিলের ত্রুটিবিচ্যুতি ধরা পড়ে।

 ২) জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থের সমন্বয় সাধনঃ আইনসভায় একটিমাত্র কক্ষ থাকলে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থের সামগ্রিক প্রতিনিধিত্ব সম্ভব নয়। অন্যদিকে, দিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা থাকলে সেক্ষেত্রে নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যেমে জাতীয় এবং আঞ্চলিক স্বার্থের স্বার্থক সমন্বয় সম্ভব হয়।

 ৩) স্বৈরচারী প্রবণতা রোধঃ একটিমাত্র কক্ষ নিয়ে আইনসভা গঠিত হলে স্বৈরচারের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে, কারণ সেক্ষেত্রে কোনো নিয়ন্ত্রণকারী থাকে না। অন্যদিকে, আইনসভার দুটি কক্ষ থাকলে প্রথম কক্ষের স্বৈরচার অতি সহজেই দ্বিতীয় কক্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

৪) জনমতের সঠিক প্রতিফলনঃ অনেকের মতে আইনসভায় দুটি কক্ষ থাকলে জনমতের সঠিক প্রতিফলন ঘটে।  এ ছাড়াও আইনসভার দুটি কক্ষের নির্বাচন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে হওয়ার দরুন পরিবর্তনশীল জনমতের সুষ্ঠ প্রতিফলন আইনসভায় দেখা যায়। 

৫) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বর্থের সুরক্ষাঃ এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার নির্বাচন জনগণের প্রত্যক্ষ  ভোটের ভিত্তিতে হওয়ায় সমাজের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্বের অভাব দেখা দেয়। কিন্তু দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় পরোক্ষ নির্বাচন ও মনোয়নের ব্যবস্থা থাকায় সংখ্যালঘু স্বার্থ সুরক্ষিত হয়। 

৬) আইনসভার কার্য বৃদ্ধিঃ বর্তমানে আইনসভার কাজ ব্যপক ভাবে পাওয়ায় একটিমাত্র কক্ষের দ্বারা যাবতীয় কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয়না। ফলে আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে বিশাল কাজকে সুচারুরূপে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।

 >> বিপক্ষে যুক্তি

১) অগণতান্ত্রিক গঠন কাঠামোঃ গণতান্ত্রিক আর্দশ অনুযায়ী, জনগণের ভোটে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে আইনসভা গঠিত হয়। কিন্তু কোনো কোনো দেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় মনোনয়ন প্রথায় প্রতিনিধি নিয়োগের ব্যবস্থা থাকায় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

২) অনাবশ্যকঃ আইনসভার দুটি কক্ষকে অনেকে অনাবশ্যক বলে মনে করেন। তাদের মতে, দুটি কক্ষেই যদি একই রাজনৈতিক দলের গরিষ্ঠতা থাকে তাহলে দ্বিতীয় কক্ষের অস্তিত্ব অনাবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়। 

৩)  সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বর্থের রক্ষায় অপরাগঃ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বর্থের সুরক্ষার জন্য দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা অত্যাবশক নয়। কারণ সংবিধান সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকলে সংখ্যালঘু স্বার্থ যথাযথভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়। এজন্য আইনসভার একটি কক্ষই যথেষ্ট।

 ৪) দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতাসম্পন্নঃ অনেকে মনে করেন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় গৃহীত কার্যাবলীর ব্যপারে কোনো প্রশ্ন উঠলে এককভাকে কোনো একটি কক্ষকে দায়ী করা যায় না। সেই ক্ষেত্রে দায়িত্ব এড়িয়ে যাবার প্রবণতা দুটি কক্ষেই দেখা যায়।        

৫) আশু আইন প্রণয়নের অনুপযুক্তঃ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভায় আইন প্রণয়নে দুটি কক্ষের ভূমিকা থাকায় জরুরি প্রয়োজনে দ্রত আইন প্রণয়ন এখানে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। 

৬) ব্যয়বহুলঃ অনেকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার অস্তিত ব্যয়বহুল বলে মনে করেন। তাঁদের মতে যেহেতু একটি কক্ষ অপ্রয়োজনীয়, তাই সদস্যদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধার জন্য অহেতুক অর্থের অপচয় ঘটে। 

উপসংহারঃ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিরুদ্ধে উপরোক্ত সমালোচনা সত্ত্বেও দেখা যায় যে, বিশ্বের অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার কাঠামো গৃহিত হয়েছে। বস্তুত, প্রথম কক্ষের প্রণীত আইন দ্বিতীয় কক্ষে সংশোধিত হওয়ার সুযোগ থাকায় তা আরও পূর্ণতা লাভ করে। 

Popular Post:

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment