ভারতীয় কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার
![](https://www.noakhalisomachar.com/media/imgAll/2018November/13-2102071450.jpg)
ভারতীয় কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর প্রভাব বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিছু প্রধান প্রযুক্তিগত ব্যবহারের দিক নিম্নরূপ:
1. যান্ত্রিকীকরণ:
- কৃষি যন্ত্রপাতি: ট্র্যাক্টর, হারভেস্টার, রোটাভেটর, এবং অন্যান্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি কার্যক্রম সহজ ও দ্রুত করা হচ্ছে।
- ড্রিপ ও স্প্রিংকলার সেচ ব্যবস্থা: জল সংরক্ষণ ও সঠিকভাবে জল সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
2. ডিজিটাল প্রযুক্তি:
- মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: বিভিন্ন কৃষি সম্পর্কিত অ্যাপ্লিকেশন, যেমন কিষাণ সুয়িধা, আই-কৃষি, এবং ফার্মার ফ্রেন্ডলি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলির মাধ্যমে কৃষকরা আবহাওয়ার পূর্বাভাস, ফসলের দাম, এবং কৃষি উপদেশ পেতে পারেন।
- ই-নাম (National Agriculture Market): ই-নাম একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যা কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে সহায়ক। এর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের পণ্য সরাসরি বিক্রি করতে পারেন।
3. প্রিসিশন এগ্রিকালচার:
- ড্রোন ব্যবহার: ড্রোনের মাধ্যমে ফসলের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, এবং জমির মানচিত্র তৈরি করা হচ্ছে।
- জিপিএস ও জিআইএস প্রযুক্তি: জমির মানচিত্রন এবং নির্দিষ্ট স্থানে ফসলের যত্ন নেওয়ার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
4. জৈব প্রযুক্তি (Biotechnology):
- জেনেটিক্যালি মডিফাইড ক্রপস (GM Crops): কিছু GM ফসল যেমন BT Cotton ব্যবহারের মাধ্যমে ফলন বৃদ্ধি ও কীটনাশক ব্যবহার কমানো হচ্ছে।
- বায়োফার্টিলাইজার ও বায়োপেস্টিসাইড: জৈব সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে জমির উর্বরতা এবং ফসলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
5. আইওটি (Internet of Things):
- স্মার্ট সেন্সর: মাটির আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, এবং অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য সংগ্রহের জন্য স্মার্ট সেন্সর ব্যবহার করা হচ্ছে। এই তথ্যের মাধ্যমে সঠিক সময়ে সেচ এবং সার প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে।
6. অ্যাগ্রো-মেটিওরোলজি:
- আবহাওয়া পূর্বাভাস: আধুনিক আবহাওয়া পূর্বাভাস পদ্ধতি কৃষকদের সঠিক সময়ে ফসল রোপণ, সেচ এবং সংগ্রহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক।
- ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার: জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং ফসলের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে উন্নত কৃষি পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
7. ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ:
- কোল্ড স্টোরেজ ও গুদাম: আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ এবং গুদাম ব্যবস্থার মাধ্যমে ফসলের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
- মেশিন লার্নিং ও ডেটা অ্যানালিটিক্স: ফসল উৎপাদন ও বিপণনের জন্য ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই সমস্ত প্রযুক্তির ব্যবহার ভারতের কৃষিকে আরও আধুনিক, কার্যকর এবং লাভজনক করে তুলছে। তবে, এখনও অনেক কৃষক এসব প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারছেন না, ফলে প্রযুক্তির আরও ব্যাপক প্রসার ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
-ধন্যবাদ