নেটওয়ার্ক কি ? (What Is Network)

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক :-Computer network হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যাতে দুই বা ততোধিক কম্পিউটার একসাথে যুক্ত থাকে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা বা User ফাইল, প্রিন্টার ও অন্যান্য সম্পদ ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারেন, একে অপরের কাছে বার্তা বা Message পাঠাতে পারেন এবং এক কম্পিউটারে বসে অন্য কম্পিউটারে প্রোগ্রাম চালাতে পারেন।একটি কম্পিউটার মূলত তিনটি উপাদান থাকে। যেমনঃ- ১)অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ২)নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার ৩)নেটওয়ার্ক হার্ডওয়্যার।

• অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার:-   অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার হচ্ছে কতগুলি ইন্টারফেস প্রোগ্রামের সমষ্টি যার মাধ্যমে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হয়ে নেটওয়ার্কে বিদ্যমান বিভিন্ন সম্পদ ভাগাভাগি করতে পারেন। এগুলি ক্লায়েন্ট-সার্ভার কিংবা পিয়ার-টু-পিয়ার প্রকৃতির হতে পারে।
• নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার:-  নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার হচ্ছে কতগুলি প্রোগ্রামের সমষ্টি যা নেটওয়ার্ক ব্যবহারের নিয়ম বা প্রোটোকল স্থাপন করে, যার ভিত্তিতে একটি কম্পিউটার আরেকটি কম্পিউটারের সাথে তথ্য আদান প্রদান করে বা "কথা বলে"। ফরম্যাটকৃত নির্দেশাবলি তথা প্যাকেটসমূহ আদান-প্রদান করে এই প্রোটোকলগুলি রক্ষা করা হয়। প্রোটোকলগুলি দুই কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক অ্যাপ্লিকেশনগুলির মধ্যে যৌক্তিক সংযোগ সৃষ্টি করে, ভৌত নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে প্যাকেট পরিচালন করে এবং একই সময়ে পাঠানো প্যাকেটের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা যথাসম্ভব কমানোর চেষ্টা করে।
• নেটওয়ার্ক হার্ডওয়্যার:-যেসমস্ত ভৌত যন্ত্রাংশ বা উপাদান একাধিক কম্পিউটারকে সংযুক্ত করে, তাদেরকে একত্রে নেটওয়ার্ক হার্ডওয়্যার বলা হয়।

নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ :

নেটওয়ার্ক কে মূলত ৪ ভাগে ভাগ করা হয় । যথা:-

• LAN(Local Area Network)
• MAN(Metropolitan Area Network)
• WAN(Wide Area Network)
• PAN(Personal Area Network)

১) লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(Local Area Network) -

LAN (Local Area Network), একে সংক্ষেপে ল্যান (LAN) বলা হয় । একই বিল্ডিং এর মাঝে কয়েকটি কম্পিউটার নিয়ে গঠিত নেটওয়ার্ককে বলা হয় লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Local Area Network) এই ধরনের নেটওয়ার্কের গঠন খুব সহজ , এর জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস সমুহের দাম খুব কম । এই ধরনের নেটওযার্কে ব্যবহৃত ডিভাইস সমুহ হলো হাব, সুইচ , রিপিটার । আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN ই ব্যবহার করে থাকি। ছোট-মাঝারি অফিস-আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে এ নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য থাকে ডিভাইসসমূহের পরস্পরের মধ্যে তথ্য এবং রিসোর্স শেয়ার করা। ছোট-মাঝারি অফিসে LAN তৈরি করে প্রিন্টার, মডেম, স্ক্যানার, ইত্যাদি ডিভাইসের জন্য সাশ্রয় করা যেতে পারে।

২) মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক(Metropolitan Area Network):-

একই শহরের মধ্যে অবস্থিত কয়েকটি ল্যানের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারফেসকে বলা হয় মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক । এ ধরনের  নেটওয়ার্ক ৫০-৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এই নেটওয়ার্কর ডাটা ট্রান্সফার স্পিড গিগাবিট পার সেকেন্ড। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এ ব্যবহিত ডিভাইস গুলো হলো রাউটার, সুইজ, মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা ইত্যাদি।

৩) ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক(Wide Area Network):-

Wide-Area Network (or WAN) হলো এমন একটি নেটওয়ার্ক যেটা ছোট ছোট ছোট নেটওয়ার্ক গুলকে সংযোগ (Connect) করে।Wide area network (WAN) ব্যবহার করা হয় আলাদা আলাদা LAN network গুলকে পরস্পরে সংযোগ করানোর জন্যে।কারন, LAN এর একটি সীমিত রেঞ্জ রয়েছে এবং সীমার বাইরে LAN এর মাধ্যমে Connect হওয়া সম্ভব না।এমনিতেও বিভিন্ন ধরণের WAN রয়েছে যেমন, Public Packet Network, Large Corporate Network, Military Networks, Banking Networks, Railway Reservation Network এবং Airline Reservation Network ইত্যাদি।

৪) ব্যাক্তিগত এরিয়া নেটওয়ার্ক(Personal Area Network):-

পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Personal Area Network) হচ্ছে ক্ষুদ্র পরিসরে সীমাবদ্ধ একধরনের নেটওয়ার্ক ।
কম্পিউটারের সাথে মোবাইল ফোন, টেলিফোন বা অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যকার নেটওয়ার্ক একধরনের পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক । শুধু কম্পিউটার নয়, দুইটি মোবাইল ফোনের মাঝে ব্লুটুথ দিয়ে ডাটা ট্রান্সফারের সময় যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাও পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (PAN) । তাই ক্ষুদ্র পরিসরে সীমাবদ্ধ একাধিক ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যকার নেটওয়ার্ককেই পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বলা যাবে ।