সংসদীয় এবং রাষ্ট্রপতিমূলক শাসন ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য
সংসদীয় (Parliamentary) এবং রাষ্ট্রপতিমূলক (Presidential) শাসন ব্যবস্থার মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলি হল:
সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা:
-
প্রধান নির্বাহী:
- প্রধানমন্ত্রী প্রধান নির্বাহী হন, যিনি সংসদের সদস্য এবং সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হন।
- রাষ্ট্রপ্রধান সাধারণত একটি আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করেন এবং কার্যনির্বাহী ক্ষমতা সীমিত হয়।
-
ক্ষমতার বিভাজন:
- নির্বাহী এবং আইনসভা সংযুক্ত থাকে। প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীরা সংসদের সদস্য হন।
- ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ হয় এবং মন্ত্রীরা সংসদের প্রতি জবাবদিহি থাকেন।
-
সরকারের স্থায়িত্ব:
- প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীরা সংসদের সমর্থনের উপর নির্ভর করেন। সংসদের আস্থা না থাকলে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
- সরকার দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে, কিন্তু এটি দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতা দেয়।
-
নির্বাচন প্রক্রিয়া:
- প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন হয় সংসদের সদস্যদের দ্বারা। জনগণ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন করে না।
- সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের নির্বাচন করা হয়।
-
উদাহরণ:
- যুক্তরাজ্য, কানাডা, ভারত, জার্মানি
রাষ্ট্রপতিমূলক শাসন ব্যবস্থা:
-
প্রধান নির্বাহী:
- রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাহী হন এবং সাধারণত সরকারের প্রধানও হন।
- রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন এবং গুরুত্বপূর্ণ কার্যনির্বাহী ক্ষমতা ভোগ করেন।
-
ক্ষমতার বিভাজন:
- নির্বাহী, আইনসভা, এবং বিচার বিভাগ পৃথক থাকে। রাষ্ট্রপতি সংসদের সদস্য হন না এবং সরাসরি সংসদে জবাবদিহি করতে বাধ্য হন না।
- ক্ষমতার বিভাজন স্পষ্ট থাকে।
-
সরকারের স্থায়িত্ব:
- রাষ্ট্রপতি একটি নির্ধারিত মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন না, যদি না ইমপিচমেন্টের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।
- সরকারের স্থায়িত্ব বেশি থাকে।
-
নির্বাচন প্রক্রিয়া:
- রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন। এটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য হয় (যেমন চার বা পাঁচ বছর)।
- আইনসভার নির্বাচন পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
-
উদাহরণ:
- যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো
তুলনামূলক সুবিধা ও অসুবিধা:
এই পার্থক্যগুলি দুই শাসন ব্যবস্থার মূল কাঠামো ও কার্যপ্রণালীর উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়।
-ধন্যবাদ