সুভাষ চন্দ্র বসুর ভারতীয় রাষ্ট্রীয়তা ও মুক্তিসংগ্রামে তাঁর ভূমিকা
সুভাষ চন্দ্র বসু, যিনি "নেতাজি" নামেও পরিচিত, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। তার ভারতীয় রাষ্ট্রীয়তা ও মুক্তিসংগ্রামে ভূমিকা নীচে বিশদভাবে আলোচিত হলো:
ভারতীয় রাষ্ট্রীয়তা:
-
জাতীয়তাবাদী চেতনা:
- সুভাষ চন্দ্র বসু ভারতের জন্য গভীর প্রেম এবং জাতীয়তাবাদী চেতনা লালন করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে স্বাধীনতা কেবলমাত্র ভারতের মানুষের অধিকার নয়, বরং এটি তাদের সর্বোচ্চ দায়িত্বও।
-
নেতৃত্ব ও সংগঠন:
- তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন এবং দু'বার (1938 এবং 1939) কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে, কংগ্রেসের মধ্যে একটি শক্তিশালী ও সক্রিয় আন্দোলন গড়ে ওঠে।
-
প্রতিরোধের কৌশল:
- মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতি তিনি শ্রদ্ধা করলেও, সুভাষ চন্দ্র বসু বিশ্বাস করতেন যে শুধুমাত্র অহিংসা দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পক্ষে ছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধের কৌশল গ্রহণ করেন।
মুক্তিসংগ্রামে ভূমিকা:
-
আজাদ হিন্দ ফৌজ (Indian National Army - INA) গঠন:
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সুভাষ চন্দ্র বসু জাপান ও অন্যান্য মিত্রশক্তির সহায়তায় আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। এই ফৌজের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করা।
-
ইস্টার্ন থিয়েটারে অভিযান:
- আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতীয় ভূখণ্ডে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উত্তর-পূর্ব ভারতে অভিযান চালায়। যদিও এই অভিযান সফল হয়নি, তবে এটি ভারতীয় জনগণের মধ্যে স্বাধীকারের চেতনা জাগিয়ে তোলে।
-
রেডিও বার্তা:
- সুভাষ চন্দ্র বসু নিয়মিত রেডিও বার্তার মাধ্যমে ভারতীয় জনগণকে উজ্জীবিত করতেন। তিনি বিভিন্ন ভাষায় বার্তা দিতেন, যা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা বৃদ্ধি করে।
-
মহান আত্মত্যাগ:
- তিনি জীবনের শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
পরিণাম:
সুভাষ চন্দ্র বসুর ভারতীয় রাষ্ট্রীয়তা ও মুক্তিসংগ্রামে তাঁর ভূমিকা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাঁর বীরত্ব, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ ভারতের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার প্রেরণা যুগিয়েছে।
-ধন্যবাদ
