logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের সম্পর্ক!


রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংবিধানিক সম্পর্ক 

ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা বা পার্লামেন্ট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। এই দুটি কক্ষের মধ্যে নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা। রাজ্যসভা যেখানে অনধিক ২৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হতে পারে, সেখানে লোকসভার সদস্য সংখ্যা সর্বাধিক ৫৫২ জন হতে পারে। রাজ্যসভার সদস্যদের নির্বাচন অঙ্গরাজ্যগুলির আইনসভার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের ভিত্তিতে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে নিয়মানুযায়ী হয়ে থাকে। অন্যদিকে, লোকসভার সদস্যরা সরাসরি সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচিত হন। তা ছাড়া রাজ্যসভায় মোট ১২ জন সদস্য কে মনোনীত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে। তিনি বিজ্ঞান, চারুকলা, সাহিত্য, সমাজসেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কৃতি ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে এই মনোয়ন দেন। লোকসভায় শুধুমাত্র ইঙ্গ-ভারতীয় দের মধ্যে রাষ্ট্রপতি দুজন কে মনোনিত করেন।  

১) রাজ্যসভায় ও লোকসভার সক্ষমতাঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যসভা ও লোকসভা সমান ক্ষমতা ভোগ করে।

ক) পার্লামেন্টে বিলগ্রহণ-সংক্রান্ত ক্ষমতার ক্ষেত্রে একমাত্র অর্থবিল ছাড়া রাজ্যসভা ও লোকসভা অন্যান্য বিলের ব্যাপারে সমান ক্ষমতার অধিকারী। 

খ) সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও দুটি কক্ষ সমান-ক্ষমতা ভোগ করে থাকে। উভয় কক্ষের সম্মতি ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা যায় না।

গ) রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ও পদচ্যুতির বিষয়ে এবং উপরাষ্ট্রপতির নির্বাচনের ক্ষেত্রে উভয়কক্ষ সমান ক্ষমতার অধিকারী। এ ছাড়া সুপ্রিমকোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ, মুখ্য নির্বাচনি অফিসার, নিয়ন্ত্রক ও মহাগণনা পরীক্ষক প্রমুখ পদাধিকারীকে অপসারণ করার ক্ষেত্রে রাজ্যসভা ও লোকসভার সমান ক্ষমতা রয়েছে।

ঘ) আইনসভার অবমাননা বা অধিকারভঙ্গের অভিযোগে কোনো সদস্য বা সদস্য নন এমন ব্যক্তিকে উভয়কক্ষের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।

ঙ) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হাইকোর্ট স্থাপন এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হাইকোর্টের ক্ষমতার পরিধি বাড়ানো প্রভৃতি বিষয়ে দুটি কক্ষ সমান ক্ষমতার অধিকারী।

চ) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ঘোষিত জরুরি অবস্থা অনুমোদনের ব্যাপারেও লোকসভা ও রাজ্যসভার সমান ক্ষমতা রয়েছে।  

২)  রাজ্যসভার প্রাধান্যঃ যেসব বিষয়ে রাজ্যসভার একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলি হল- 

ক) রাজ্যসভায় উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের দুই- তৃতীয়াংশ সদস্য যদি এমন প্রস্তাব গ্রহণ করেন যে, জাতীয় স্বার্থে রাজ্য-তালিকার কোনো বিষয়ে পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন, তাহলে পার্লামেন্ট সেই বিশেষ আইন প্রণয়ন করতে পারে। এভাবে রাজ্যসভার একক প্রস্তাবের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতা -বন্টন ব্যবস্থার রদবদল ঘটানো সম্ভব।   

খ) রাজ্যসভায় উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের দুই- তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে পার্লামেন্ট এক বা একাধিক সর্বভারতীয় চাকরির সৃষ্টির জন্য আইন প্রণয়ন করতে পারে(৩১২ নং ধারা)। 

গ) উপরাষ্ট্রপতির পদচ্যুতি-সংক্রান্ত প্রস্তাব শুধুমাত্র রাজ্যসভায় উত্থাপন করা যায়। এ ছাড়া আইনসভার স্থায়ী কক্ষ হিসেবে রাজ্যসভা লোকসভার তুলনায় একটি স্বতন্ত্র মর্যাদা ভোগ করে। 

৩) লোকসভার প্রাধান্যঃ যেসব বিষয়ে লোকসভার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলি হল-

ক) অর্থবিল একমাত্র লোকসভাতেই উত্থাপিত হতে পারে। তা ছাড়া কোনো বিল অর্থবিল কি না সে বিষয়ে মতবিরোধ ঘটলে লোকসভার অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। অর্থবিল লোকসভায় গৃহীত হওয়ার পর রাজ্যসভার কাছে সুপারিশের জন্য পাঠানো হয়। কোনো অর্থবিল প্রত্যাখ্যান বা সংশোধন করার ক্ষমতাও রাজ্যসভার নেই। রাজ্যসভাকে অর্থবিল সমন্ধে ১৪ দিনের মধ্যে তার মতামত জানাতে হয়।

খ) কোনো সাধারণ বিল নিয়ে লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তা মীমাংসার জন্য রাষ্ট্রপতি উভয়কক্ষের এক যৌথ অধিবেশন ডাকতে পারেন। এই অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে বিলটির ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তবে এক্ষেত্রে লোকসভার মতামতই জয়ী হয়, কারণ লোকসভার সদস্যসংখ্যা রাজ্যসভার চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি।

গ) ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনী অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ব্যপারে লোকসভা কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করতে বাধ্য থাকবেন। 

ঘ) কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা তার কাজকর্মের জন্য শুধুমাত্র লোকসভার কাছেই দায়বদ্ধ থাকেন। মন্ত্রীসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ক্ষমতা একমাত্র লোকসভারই রয়েছে। এই কারণে লোকসভার আস্থা হারালে মন্ত্রীসভার পতন ঘটে। 

উপসংহার 

ভারতীয় পার্লামেন্টের দুই কক্ষের মধ্যে সাংবিধানিক সম্পর্ক বিশ্লেষণের শেষে বলা যায় যে, কিছু ক্ষেত্রে সমমর্যাদাসম্পন্ন হলেও সামগ্রিক দিক থেকে লোকসভা রাজ্যসভা অপেক্ষা অনেক বেশি ক্ষমতার অধিকারী। 


Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment