logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

গৌতম বুদ্ধের জীবনী


গৌতম বুদ্ধ :-   ষষ্ঠ শতকে যারা প্রতিবাদে ধর্মকে ভারত তথা বিশ্বে সর্বাধিক জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গৌতম                           বুদ্ধ।

জন্ম :- 
বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে নেপালের তরাই অঞ্চলের কপিলাবস্তু লুম্বিনী উদ্যানে শাক্য নামে এক ক্ষত্রিয় রাজপরিবারে ৫৬৩ খ্রিস্টপূর্ব অথবা ৪৮০ অব্দ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শুদ্ধোধন  এবং মাতা ছিলেন মায়াদেবী।  গৌতম বুদ্ধের পিতা ছিলেন কপিলাবস্তুর রাজা। এবং মাতা ছিলেন কোলিয়গনের রাজকন্যা। গৌতম বুদ্ধ ছিলেন একজন সম্যকসম্বুদ্ধ (তপস্বী) ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারী । গৌতম বুদ্ধ ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা। আধ্যাত্মিক সাধনা ও জীবন নিয়ে নিজস্ব জ্ঞান-উপলব্ধির পর তিনি বুদ্ধ নামটি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি সিদ্ধার্থ গৌতম,শাক্যমুনি বুদ্ধ বা "বুদ্ধ" উপাধি অনুযায়ী কেবলমাত্র বুদ্ধ নামেও পরিচিত ছিলেন।

 

◾গৌতম বুদ্ধের জীবন কাহিনী:-

শাক্য প্রজাতন্ত্রের নির্বাচিত প্রধান ক্ষত্রিয় বংশের শুদ্ধোধনের পুত্র ছিলেন সিদ্ধার্থ গৌতম। শাক্যদের প্রথা অনুসারে গর্ভাবস্থায় মায়াদেবী শ্বশুরবাড়ি থেকে পিতৃরাজ্যে যাবার পথে অধুনা নেপালে তরাই অঞ্চলের অন্তর্গত লুম্বিনী গ্রামে এক শালগাছের তলায় সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। তাঁর পিতা সিদ্ধার্থের জন্মের পঞ্চম দিনে নামকরনের জন্য আটজন ব্রাহ্মণকে আমন্ত্রণ জানালো। এবং তারা শিশুর নাম রাখেন সিদ্ধার্থ। সিদ্ধার্থ নামের অর্থ হল যিনি সিদ্ধিলাভ করেছেন। সিদ্ধার্থের জন্মের সপ্তম দিনে মায়াদেবীর  মৃত্যু হয়। তারপর অসিত নামে পর্বতদেশ থেকে আগত একজন সাধু নবজাত শিশুকে দেখে ভবিষ্যৎ বাণী করেন যে, এই শিশু অর্থাৎ সিদ্ধার্থ পরবর্তীকালে একজন রাজচক্রবর্তী অথবা একজন সিদ্ধ সাধক হবেন। একমাত্র সর্বকনিষ্ঠ আমন্ত্রিত ব্রাহ্মণ কৌন্ডিণ্য স্পষ্টভাবে বলেছিলেন এই শিশু পরবর্তীকালে "বুদ্ধত্ব" লাভ করবেন। সিদ্ধার্থের মাতার মৃত্যুর পর বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতম অর্থাৎ তাঁর মাসি এর কাছে মানুষ হন।
সংসারের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য তার পিতা-মাতা তাকে ১৬ বছর বয়সে কোলিয়গনের সুন্দরী এক কন্যা যশোধরার সাথে সিদ্ধার্থের বিবাহ দেন। এবং তারা রাহুল নামে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সিদ্ধার্থ তার জীবনের ২৯টি বছর প্রথমে রাজপুত্র হিসেবে অতিবাহিত করেন । "শুদ্ধোধন সিদ্ধার্থের জীবনে বিলাসিতার কোনোরকম ত্রুটি রাখেনি, সমস্ত রকম ব্যবস্থা করার সর্ত্ত্বেও সিদ্ধার্থ বস্তুগত ঐশ্বর্য - ধনসম্পত্তি যে জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না তা উপলব্ধি করা শুরু করেন।

 

মহাভিনিষ্ক্রমণ :- 

বৌদ্ধ  পুঁথিগুলিতে কথিত আছে ২৯ বছর বয়সে রাজকুমার সিদ্বার্থ প্রাসাদ থেকে কয়েক বার ভ্রমণে বের হলে তিনি একজন বৃদ্ধ মানুষ, একজন অসুস্থ মানুষ, একজন মৃত মানুষ ও একজন সন্ন্যাসীকে দেখতে পান।  সাংসারিক দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণায় সম্পূর্ণ  অভিজ্ঞ সিদ্ধার্থ তাঁর সারথি ছন্নকে এদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে । এবং এইসবের অর্থ কি জানতে চায়। ছন্ন তাকে ভালো করে বুঝিয়ে বলে যে সকল মানুষের নিয়তি যে, তারা একসময় বৃদ্ধ, অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। মুণ্ডিত-মস্তক পীতবর্ণের জীর্ণবাস পরিহিত সন্ন্যাসী সম্বন্ধে ছন্ন তাকে বলল, যে মানুষের দুঃখের জন্য নিজ গার্হস্থ্য জীবন ত্যাগ করেছেন তিনিই সন্ন্যাসী। সংসার জীবনের দুঃখ, জরা, ব্যাধি এবং মৃত্যুর বিষয়গুলি গৌতম বুদ্ধকে খুব ভাবিয়ে তোলে বৌদ্ধধর্মে এই তিনটি বিষয়কে "ত্রিতাপ" বলে। এই সকল বিষয়গুলো থেকে সিদ্ধার্থ এক নতুন অভিজ্ঞতা উপলব্ধি করে। এবং বিষাদগ্রস্ত সিদ্ধার্থ মানব জীবনের থেকে "ত্রিতাপের যন্ত্রনা" মোচনের জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে।
বার্ধক্য,জরা এবং মৃত্যুকে জয় করার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে একজন সন্ন্যাসীর জীবন-যাপনের সিদ্ধান্ত নেন। হঠাৎ এক গভীর রাতে ঘুমন্ত স্ত্রীর পুত্র, সংসারের প্রতি বীতরাগ সিদ্ধার্থ পরিবারের সকলকে ছেড়ে নিঃশব্দে বিদায় জানিয়ে প্রিয় অশ্ব কন্থক ও সারথি ছন্নকে নিয়ে এই বিশাল বিলাস-ভবন প্রাসাদ ত্যাগ করেন। প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বনের শেষ প্রান্তে গিয়ে তার পরনের থাকা রাজবস্ত্র তিনি ত্যাগ করেন এবং তলোয়ার দিয়ে তার লম্বা চুল কেটে মুণ্ডিত-মস্তক হন। কন্থক ও ছন্নকে বিদায় জানিয়ে তাঁর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। 

 

গৌতম বুদ্ধের বোধিলাভ:- 

গৌতম বুদ্ধ আলার কালাম নামে এক সন্ন্যাসীর কাছে প্রথমে যোগ শিক্ষা গ্রহণ করে কিন্তু তাতে তিনি তার প্রশ্নের যথাযথ সন্তোষজনক উত্তর লাভ না পাওয়ায় পরে তিনি উদ্দক রামপুত্ত নামে এক অন্য একটি সন্ন্যাসীর কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণ করে যোগ শিক্ষা লাভ করেন। কিন্তু সেখানেও তার জিজ্ঞাসা পূরণ না হওয়ায় গৌতম বুদ্ধ তাকেও ত্যাগ করেন। বুদ্ধগয়ার সামনেই উরুবিল্ব নামক এক রম্য জায়গার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। শারীরিক কষ্টপ্রদানের মাধ্যমে নাকি মুক্তিলাভ সম্ভব তিনি তা বিশ্বাস করতেন। এবং এই বিশ্বাসকেই ভিত্তি করে গৌতম বুদ্ধ সহ আরো পাঁচজন তপস্বী প্রায় ছয় বছর ধরে অনশন, শারীরিক নিপীড়ন ও কঠোরতম তপস্যার পর আস্তে আস্তে তার শরীর অস্থিচর্মসার হয়ে পড়ে ও তার অঙ্গ সঞ্চালনের ক্ষমতা কমে গিয়েছে এবং তিনি মরণাপন্ন হলে তার উপলব্ধি হয় যে, অনশন করে কিংবা শরীরকে অপরিসীম কষ্ট দিয়ে কঠোর তপস্যা করে বোধিলাভ সম্ভব নয়।
ধর্মচক্র প্রবর্তন সুত্রানুসারে- অসংযত বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং কঠোর তপস্যার মধ্যবর্তী একটি মধ্যম পথের সন্ধান করে বোধিলাভ করা যায় বলে তিনি তখন তা উপলব্ধি করেন। এবং তিনি আবারও খাদ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় । এক স্থানীয় গ্রাম্য সুজাতা নাম্নী নামে এক কন্যার কাছ থেকে তিনি এক পাত্রে পরমান্ন খান। গৌতম বুদ্ধকে আহার করতে দেখে তাঁর সঙ্গে থাকা বাকি পাঁচজন সাথী বুদ্ধের ওপর বিরক্ত হয়ে তাকে একা ফেলে ছেড়ে চলে যান। এরপর গৌতম বুদ্ধ একটি অশ্বল্থ গাছের তলায় ধ্যান শুরু করে এবং প্রতিজ্ঞা করে যে সত্য লাভ না করা অবদি স্থান ত্যাগ করবেন না। এরপর তিনি ৪৯ দিন ধরে ধ্যান করার পরে অবশেষে বোধিলাভ করে। বোধি প্রাপ্ত গৌতম বুদ্ধ তখন মানব জীবনের দুঃখ ও তার কারণ এবং দুঃখ নিবারণের উপায় সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন,যা চতুরার্য সত্য নামে খ্যাত হয়। গৌতম বুদ্ধের মতানুসারে এই সত্য সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলে মুক্তি বা নির্বাণ লাভ সম্ভব।

 

গৌতম বুদ্ধের ধর্মপ্রচার:- 

বোধিলাভের পর বলখ অঞ্চলের তপুস্স ও ভল্লিক নামে দুইজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে গৌতম বুদ্ধের দেখা হয়। যারা গৌতম বুদ্ধকে মধু ও বার্লি নিবেদন করেন। এই দুইজন ছিলেন বুদ্ধের প্রথম শিষ্য।  প্রাক্তন শিক্ষক আলাম কালাম ও উদ্দক রামপুত্তের সাথে দেখা করে গৌতম বুদ্ধ তাঁর এই নবলব্ধ জ্ঞানের কথা বলার জন্য অনেক উৎসাহী ছিলেন।
কিন্তু পরে জানতে পারে তার প্রাক্তন দুই শিক্ষক আর বেঁচে নেই। এরপর তিনি বারানসীর নিকট ঋষি পতনের মৃগ উদ্যানে যাত্রা করেন, তাঁর প্রাক্তন পাঁচ সঙ্গী যারা একসময় তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে। গৌতম বুদ্ধ সাক্ষাৎ করার পর তার পাঁচ সঙ্গীকে প্রথম শিক্ষা প্রদান করেন। যা বৌদ্ধ ঐতিহ্যে ধর্মচক্র প্রবর্তন নামে পরিচিত। ঠিক এইভাবে পাঁচ সঙ্গীকে ঘিরে ইতিহাসে প্রথম বৌদ্ধ সংঘ গঠিত হয়।এরপর মহাকশ্যাপ নামে অগ্নি উপাসক ব্রাহ্মন তাঁর অনুগামীরাও সংঘ যোগ দেন। বুদ্ধ সম্রাট বিম্বিসারকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো বুদ্ধ প্রাপ্তির পরে রাজগৃহে যাত্রা করলে সঞ্জয় বেলাট্রিপুত্তের দুইজন শিষ্য সবিপুও ও মৌদগল্যায়ন সংঘে যোগদান করেন৷ গৌতম বুদ্ধের পিতা শুদ্ধোধন প্রায় বুদ্ধত্ব লাভের এক বছর পর তাঁর ছেলেকে কপিলাবস্তু শহরে আমন্ত্রণ জানান৷ গৌতম বুদ্ধ সংঘের সাথে ভিক্ষা করে খাদ্য সংগ্রহ করতেন৷ কপিলাবস্তুর তাঁর পুত্র রাহুল তাঁর কাছে শ্রমনের  দীক্ষা নেয়। এবং তাঁর সাথে আরো দুইজন আত্মীয় ঘথা আনন্দ ও অনুরুদ্ধ তার কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন৷ এই সকল শিষ্য ছাড়াও গৌতম বুদ্ধের উপলি, মহাকাত্যায়ন, পুন্ন ও সুভূতি বুদ্ধের দশজন প্রধান শিষ্য ছিলেন৷
তিন বছর পরে শাক্যদের সাথে কোলীয় গনের রোহিনী নদীর অংশ নিয়ে একটি বিবাদ তৈরী হলে বুদ্ধ তাঁর মীমাংসা করেন৷ কয়েকদিন পর তাঁর পিতা মৃত্যুবরণ করে। তারপর তাঁর বিমাতা মহাপজাপ্রতি গোতমী সংঘে যোগদানের ইচ্ছার কথা বলেন৷ প্রথমে বুদ্ধের নারীদের সংঘে যোগদানের বিষয়টি তেমন ভাবে মেনে নেননি কিন্তু পরে আনন্দের উৎসাহে বুদ্ধ সংঘ গঠনের ঠিক পাঁচ বছর পরে নারীদের ভিক্ষুনী হিসেবে প্রবেশের অনুমতি দেন। এই ভাবেই গৌতম বুদ্ধের ধর্মপ্রচার সারা বিশ্বে ছরিয়ে পরে।

 

মহাপরিনির্বাণ বা মৃত্যু :- 

মহাপনিব্বান সুও অনুসারে - গৌতম বুদ্ধের বয়স যখন প্রায় আশি, সেইসময় তিনি  তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন৷ পাওয়া নামক এক জায়গায় থাকাকালীন চন্ড নামক এক কামার গৌতমবুদ্ধকে ভাত ও শূকরমদ্দক ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের খাবার খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান৷ সেই সব খাবার পর আমাশয় দ্বারা আক্রান্ত হন৷ চন্ডের দেওয়া খাবার যে তাঁর অসুস্থতার কারণ নয়, আনন্দ যাতে তা চন্ডকে বোঝান, এমনটা বৌদ্ধ অনন্দকে নির্দেশ দেন৷ খুব শরীর খারাপ নিয়েও বুদ্ধ কুশীনগর রওনা হয় আনন্দ বাধা দিলেও গৌতম তার কোনো কথায় শোনেননি৷ এবং অনন্দকে এইখানে নির্দেশ দেন দুইটি শাল বৃক্ষের মধ্যের একটি জমিতে একটি কাপড় বিছিয়ে তাকে যেন শুইয়ে দেওয়া হয়৷ এরপরে শায়িত অবস্থায় বুদ্ধ উপস্থিত সকল ভিক্ষু ও সাধারণ মানুষকে তাঁর শেষ উপদেশ প্রদান করেন। তাঁর জীবনের শেষ বানী ছিল "বয়ধম্মা সঙ্খারা অপ্পমাদেন সম্পাদেথা" অর্থাৎ "সকল জাগতিক বস্তুর বিনাশ আছে। অধ্যবসায়ের সাথে আপনার মুক্তির জন্য সংগ্রাম কর৷" বিভিন্ন পুঁথিতে অনুবাদ বিভ্রাট ও লিখন শৈলীর পার্থক্যের জন্য গৌতম বুদ্ধের অন্তিম আহার্য্য বস্তু সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারনা পাওয়া যায় না।

শূকরমদ্দক শব্দটিকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিভিন্ন অর্থ দিয়েছেন যেমন- 
আর্থার ওয়েলির মতে - থেরবাদ ঐতিহ্যনুসারে শুকরমদ্দভ বলতে শূকরের নরম মাংস বোঝানো হয়।
কার্ল ইউজিন মিউম্যান - এই শব্দের অর্থ করেছেন শূকরের নরম আহার৷ এবং নিউম্যান ও ওয়েলি - আবার বলেছেন যে এই আহারের সাথে শূকর শব্দটি যুক্ত হলেও হয়তো এটি একটি শুধুমাত্র একটা উদ্ভিদ, যাকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীকালে কয়েক শতাব্দী পর গৌতমবুদ্ধের জীবনী রচনার সময় শূকরমদ্দভ কথাটি অর্থ শূকরের নমর মাংস হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। 
অস্কার ভন হিনুবারের মতে, গৌতম বুদ্ধের মৃত্যু খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারনে হয়নি, বরং সুপিয়িয়র মেসেন্ট্রিক আর্টারি সিনড্রোম নামক বার্ধ্যকের সময়ের একটি রোগের কারণে হয়েছিল। 
দীপবংশ ও মহাবংশ নামে শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থানুসারে , গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর ২১৮ বছর পরে সম্রাট অশোকের রাজ অভযেক হয়। এই দিকটি বিচার করলে দেখা যায় ৪৮৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গৌতম বুদ্ধের মৃত্যু হয়।
অপরদিকে চীনা পুথিঁগুলিতে নজর দিলে লক্ষ্য করা যায় - গৌতম বুদ্ধের ১১৬ বছর পরে আশাকের রাজ্যাভিষেক হয়, সেই অনুসারে বিচার করলে ৩৮৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বুদ্ধের মৃত্যু হয়। যাইহোক - থেরবাদ বৌদ্ধ ঐতিহ্যে ৫৪৪ বা ৫৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ ঘটে বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে। এবং মায়ানমারের ৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ১৩ই মে ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধরা ৫৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ১৩ই মার্চ বুদ্ধের মৃত্যুদিবস বলে মনে করা হয়।

 

গৌতম বুদ্ধের ঐতিহ্যশালী জীবনীগ্রন্থ :-

বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী জীবনীগ্রন্থ গুলি বুদ্ধের জীবনের মূল উৎস ছিল৷ "ত্রিপিটক" বুদ্ধ বংস নামক গ্রন্থে গৌতম বুদ্ধের জীবনী পাওয়া যায়। "ত্রিপিটক''  শব্দের অর্থ তিনটি পেটিকা বা খন্ড৷ তিনটি খন্ডে বিভক্ত বলে এর নাম হয়েছে "ত্রিপিটক।" এই ত্রিপিটক এর মধ্যে লিপিবদ্ধ রয়েছে সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধের ধর্ম, দর্শন , বাণী ও উপদেশ। এই ত্রিপিটকের তিনটি খন্ড হচ্ছে-

  1. বিনয়পিটক 
  2. সুত্তপিটক
  3. অভিধম্মপিটক

পালি ত্রিপিটক যেহেতু বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের পর হতে সংকলিত হয়েছে তাই এই গ্রন্থের সত্যতা মেনে নিলেও ভুল হবে না৷ তথাগত বুদ্ধ নিজেই এই গ্রন্থেরবর্ণনা প্রকাশ করেছেন৷ অশ্বঘোষ দ্বারা রচিত দ্বিতীয় শতাব্দীতে রচিত বুদ্ধচরিত নামক মহাকাব্যটি বুদ্ধের প্রথম পূর্ণ জীবনী গ্রন্থ। ত্বতীয় শতকে রচিত হয় ললিতবিস্তার সূত্র বুদ্ধের জীবনী নিয়ে লিখিত পরবর্তী গ্রন্থ। এবং চতুর্থ শতাব্দীতে মহাসাংঘিক রচিত লোকোত্তর বাদ ঐতিহ্যের মহাবস্তু গ্রন্থটি অপর একটি প্রধান জীবনীগ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত হয়। ধর্মগুপ্তক রচিত তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে ঐতিহ্যের অভিনিস্ক্রমণ সূত্র গ্রন্থটি বুদ্ধের একটি বিরাট জীবনীগ্রন্থ ছিল। সর্বশেষে পঞ্চম শতাব্দীতে বুঘঘোষ রচিত থেরবাদ  ঐতিহ্যের নিদানকথা উল্লেখ্য৷ ত্রিপিটকের অংশ হিসেবে জাতক মহাপদন সূত্র ও আচরিয়াভূত সূত্রে বুদ্ধের সম্পূর্ণ জীবনী না থাকলেও কিছু নির্বাচিত অংশ রয়েছে। ইত্যাদি গ্রন্থে বুদ্ধকে লোকোত্তর সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে৷ ভারতীয়রা প্রাচীন যুগের ইতিহাস ও কালপঞ্জীর ব্যাপারে নির্লিপ্ত ছিলেন, বরং তারা দর্শনের ওপর বেশি মনোযোগী ছিলেন। বৌদ্ধগ্রন্থগুলিতে এই ধারার চিত্র লক্ষ্য করা যায়।

 

◾ গৌতম বুদ্ধের অহিংসা নীতি :- 

তথাগত ভগবান বুদ্ধ ছিলেন সমস্ত প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে৷ অহিংসা কথার অর্থ হল হিংসা ত্যাগ করা৷ বৌদ্ধমতে অহিংসা কথার অর্থ বলতে বোঝায় কায়-মন-বাক্যে হিংসা বর্জন করা। কারো অনিষ্ঠ না করা৷ প্রানিহত্যা থেকে শত শত হাত দূরে থাকা ও সকল জীবকে রক্ষা করা, মানবতা, কোমলতা, দয়া, করুনা ইত্যাদি৷ বুদ্ধ বলেছিলেন - " কেবলমাত্র নিজেকে ভালোবাসলে হবে না, ভালোবাসতে হবে সমস্ত জীবকে ৷ বুদ্ধ এমন অহিংসবাদী নীতি প্রবর্তন করেছিলেন ৷

বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহনেচ্ছায় কোনো ব্যক্তি যদি বুদ্ধের কাছে আসতেন, তিনি তাকে সর্বপ্রথম পাঁচটি বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করাতেন৷ সেই পাঁচটি বিষয় বৌদ্ধ ধর্মের মতানুসারে "পঞ্চশীল" নামে পরিচিত ছিল৷ প্রথম শীলটি ছিল - "প্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকা৷" এই বাক্যটির থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে একজন বৌদ্ধ হতে হলে কেবলমাত্র মানুষের প্রতি ভালোবাসা মৈত্রী ও করুনার চর্চা থাকলেই হবে না সমানভাবেই জীবের প্রতি মৈত্রী ও করুণা প্রদর্শন অবশ্যই থাকা উচিত৷ এই প্রসঙ্গে বলতে শোনা যায় - "সকলেই দন্ডকে ভয় করে, জীবন সকলের প্রিয়, মৃত্যুর ভয়ে সকলেই সন্ত্রস্ত, সুতরাং নিজের সাথে তুলনা করে কাউকে প্রহার কিংবা আঘাত করো না৷

ধর্ম প্রবর্তকদের মধ্যে একমাত্র বুদ্ধ এবং জৈন ধর্মের স্বপ্নদ্রষ্টা মহাপুরুষ মহাবীরকে প্রাণীর প্রতি এতটা সহনশীল হতে দেখা যায়। অন্যান্য ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রবর্তকদের মধ্যে এমনটা দেখা যায় না। উল্টে তারা তাদের অনুসারীদের- প্রাণীদেরকে হত্যা এবং প্রাণীদের মাংস ভক্ষণ ও উপভোগ করতে উৎসাহ দেয়, এর ফলে সেই সমস্ত ধর্মগুরুরা প্রাণীদের কাছ থেকে শ্রদ্ধা ও শুভকামনা থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করা হয়। বুদ্ধ অহিংসানীতির চরমে পৌঁছেছিলেন, তার মতে প্রানীর‌ও প্রাণ আছে। বুদ্ধ বলেন,নদী কিংবা সমুদ্রের উপর  জাহাজ কিংবা নৌকা চালানোও এক ধরনের পাপ। তিনি আরোও বলেন, আমাদের নিঃশ্বাসের আদান-প্রদানের মাধ্যমে যেহেতু ছোট ছোট পোকা মাকড়াদি মারা যায়। তাই আমাদের উচিত আমাদের নাকে একটি ছোট কাপড় দিয়ে ঢেকে নিঃশ্বাস নেওয়া।
মহাকরুনিক বুদ্ধের শিক্ষা হচ্ছে মধ্যম পথের অবলম্বন করা। অতএব বুদ্ধকর্তৃক সর্বপ্রকার চরমপন্থা পরিহৃত হয়েছে। ফলে যে কোন ব্যক্তি যে কোন জায়গায় এই ধর্মমত পালন করতে পারে। বুদ্ধের মত যেকোন প্রাণীর জীবন- সে বন্ধুত্বপূর্ণ হোক বা অবন্ধুত্বপূর্ণ, ছোট কিংবা বড়ো, পরিচিত কিংবা অপরিচিত, দৃষ্ট অথবা অদৃষ্ট, ঐ নির্দিষ্ট প্রাণীর নিকট অতীব প্রিয়। খন্ধ পরি ওং এ বুদ্ধ বলেন- "পদহীনের সহিত আমার মৈত্রী হোক ও বহুপদের সহিত‌ও আমার মৈত্রীভাব হোক।সকল সত্ত্ব, সকলজীব, মঙ্গল দর্শন করুক, কেহ কোন প্রকার অমঙ্গল প্রাপ্ত যেন না হয়।  বুদ্ধ সমস্ত প্রাণীর প্রতি এমন ভাবেই শ্রেয় ও যত্নশীল মৈত্রী প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। বৌদ্ধশিক্ষায় বুদ্ধ এমন কোনো কথা বলেননি যা অন্য কোন প্রাণীর জন্য কিঞ্চিত পরিমানও ক্ষতিকর কিংবা দুঃখজনক হয়। তিনি তাঁর শিষ্যদের এমন অমানসিকতা‌ হিংসাপরায়ণ এমন কোন শিক্ষা দেননি যাতে গোপনেও কারো কোন ক্ষতি কখনো হতে পারে।

কাকাচুপম সূত্রে ভগবান বুদ্ধ বলেছিলেন,- হে ভিক্ষু যদি হিংস্র দুর্বৃজ্ঞান কোন ব্যক্তিকে দুই- হাতল বিশিষ্ট করাত দিয়ে টুকরো টুকরোও করেন, এবং সেই ব্যক্তির মনে ঐ দুর্বৃত্তদের প্রতি এত টুকু পরিমাণ হিংসাভাব‌ও যদি জন্মে থাকে তাহলে মনে করা হবে, সেই ব্যক্তিটি আর যাই হোক না কেন সে আমার ধর্মের প্রকৃত অনুসারী নয়। হে ভিক্ষুগণ, এমনকি সেরকম তোমরা দৃঢ়তার সহিত এইরূপ চিন্তা করবে যে, আমাদের মন কোনো অবস্থাতেই কখনো পাল্টাবে না। আমরা তাদেরকে কোন ধরনের বাজে কথা বলব না। বরং তাদেরকে ভালোবাসবো। আমরা আমাদের মৈত্রী চিন্তাধারার ব্যাপকতায় সমস্ত পৃথিবীর প্রাণীদের প্রতি অপরিসীম করুণা প্রসারিত করবো। এমনকি সে যদি আমাদের পরম শত্রুও হয় তবুও তাদের প্রতি আমরা মৈত্রী প্রদর্শনের চিন্তা করতে অভ্যস্ত থাকবো।

বুদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হতে হলে প্রথমে একজন ব্যক্তি যে শিক্ষা পান  তা হলো- কোন অবস্থাতে কোন প্রাণীর প্রতি কোনো রকমের ক্ষতি করা যাবে না। এবং দুঃখ প্রদান করা যাবে না। এ থেকে বোঝা যায় বুদ্ধ হচ্ছেন একজন প্রকৃত অহিংসানীতির প্রবক্তা। কোন যাগ-যজ্ঞের অনুষ্ঠানে অর্থাৎ যেখানে হত্যা, ধ্বংস, আঘাত কিংবা দুঃখের কার্য্যাদি সম্পাদিত হয়ে থাকে সেখানে বৌদ্ধদের মধ্যে যারা বুদ্ধের প্রকৃত ভক্ত- তারা কখনোই এই ধরণের  যাগ-যজ্ঞের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন না৷ প্রাণীর প্রতি যারা সত্যিই মন থেকে মৈত্রী প্রদর্শনে সর্বদা রত থাকেন তারাই হচ্ছেন প্রকৃত বৌদ্ধ৷

বুদ্ধের এই অহিংসানীতির পথ ধরেই সম্রাট অশোক চন্ডাশোক থেকে পরিবর্তন হয়েছিলেন ধর্মাশাকে৷ এমনকি শ্রীলংকার ধর্মপ্রাণ রাজা সিরিসংযবো, ভারতে মহাত্মাগান্ধি ও  জওহরলাল নেহরু তাঁদের অহিংসানীতির কারনে চিরকাল অমর হয়ে থেকেছেন ইতিহাসের সমস্ত পাতায়৷

গৌতম বুদ্ধের এই অহিংসানীতি কোনো সমাজ, জাতি, কিংবা রাষ্ট্রের মাধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটা হওয়া চাই বৈশ্যিক এবং সর্বকালিক তাহলেই গড়ে উঠবে পৃথিবীতে আবারও শান্তির নীড়-মানুষ তথা প্রাণীগণ উভয়েই খুঁজে পাবে জীবনের নিরাপত্তা৷ আজকের এই অরাজকতার যুগে যখন মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে ভেদাভেদ নেই, তখন বুদ্ধের এই মহামূল্যবান ধর্মের গুরুত্ব অপরিসীম৷

 

◾ গৌতম বুদ্ধের অমৃত বাণী, উক্তি, ও উপদেশ :-

গৌতম বুদ্ধের জীবন ছিল বিভিন্ন শিক্ষনীয় ঘটনা দ্বারা সমন্বিত। তিনি ছিলেন একজন তপস্বী। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ মানব সভ্যতার একজন ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। গৌতম বুদ্ধ মানব জীবনের দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায়ের জন্য তিনি তার অনুগামীদের জন্য কিছু জীবনের পথ নির্দেশিকা দেন। তিনি বলেন নির্বাণ লাভ কিংবা কামনা-বাসনা থেকে মুক্তিলাভের মাধ্যমেই দুঃখের অবসান ঘটে। এর মধ্যে দিয়েই অজ্ঞানতা দূর হয়ে মেলে পূর্ণ শান্তি। আজ হিংসায় ঘেরা উন্মত্ত পৃথিবীতে জীবন, সুখ, শান্তি, প্রেম- ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, ধ্যান, আধ্যাত্মিকতা, জ্ঞান, অনুপ্রেরণা ইত্যাদির ওপর বলা গৌতম বুদ্ধের উক্তি বা বাণী গুলো মানুষকে সঠিক পথ অনুসন্ধান দিতে পারে। গৌতম বুদ্ধের জীবন বদলে দেওয়া অনুপ্রেরণাদায়ক উক্তি বা বাণী গুলি হলো:-

 

জীবন নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি :-

  1. “তুমি একমাত্র সেটাই হারাও যেটা তুমি আঁকড়ে ধরে বসে থাকো।”
  2. “শান্তি মনের ভীতর থেকে আসে, তাই সেটা ছাড়া শান্তির অনুসন্ধান করোনা।”
  3. “প্রাজ্ঞ ব্যক্তি কখনো নিন্দা বা প্রশংসায় প্রভাবিত হয় না।”
  4. “তোমাকে তোমার রাগের জন্য শাস্তি দেওয়া হবেনা বরং তুমি তোমার রাগের দ্বারাই শাস্তি পাবে।”
  5.  “অর্থহীন সহস্র বাক্য অপেক্ষা একটিমাত্র সার্থক বাক্য যা শুনে লোকে শান্তি লাভ করে তাই শ্রেয়।” 
  6. “আসক্তিই দুর্ভোগের মূল কারণ।” 
  7. “মূর্খরা ‘আমার পুত্র, আমার অর্থ, আমার ধন’ এই চিন্তায় যন্ত্রণা ভোগ করে। যখন সে নিজেই নিজের না তখন পুত্র বা ধন তার হয়            কীভাবে?” 
  8. “জ্ঞানগর্ভ জীবনের জন্য মুহূর্তের ইতিবাচক ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই জন্য ভয়কে তুচ্ছ করতে হবে, এমনকি মৃত্যুকেও।” 
  9. “লক্ষ্য বা গন্তব্যে পৌঁছানোর থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেই যাত্রাকে ভালোভাবে পূরণ করা হয়ে থাকে।”
  10. “করুণাই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি।” 
  11. ”ধ্যান থেকে আসে জ্ঞান ; ধ্যানের অভাবে আসে অজ্ঞতা। জানতে শেখো কি তোমাকে এগিয়ে নিয়ে যায় আর কি পিছু টানে, জেনে          নিয়ে নিজের পথ নির্ণয় করো যা জ্ঞানের দিকে যায়।”
  12. “কোনো কিছুই চিরন্তন নয়।” 
  13. “যদি আপনার দয়া আপনাকে সম্মিলিত করতে না পারে, তাহলে সেটা অসম্পূর্ণ হয়ে থাকে।”
  14. “ঘৃণায় কখনও ঘৃণা দূর হয় না। অন্ধকারে আলো আনতে তোমাকে কোনো কিছুতে আগুন জ্বালতেই হবে।” 
  15. “প্রত্যেক মানুষ, তার স্বাস্থ্যের কিংবা রোগের সৃষ্টিকর্তা হয়ে থাকে।” 
  16. “সবকিছুকে বোঝার অর্থ সবকিছুকে ক্ষমা করে দেওয়া।” 
  17. “আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন আরেকজনের পরিপূরক। অর্থাৎ সমাজে আমরা কেউ একা নই।”
  18. “হাজারও খালি শব্দের থেকে ভালো সেই শব্দ, যেটা শান্তি নিয়ে আসে।” 
  19. “কোনো খারাপ জিনিস, কোনো খারপ চিন্তা থেকেই আসে।” 
  20. “খারাপটি সর্বদা তুমি নিজেই পছন্দ করছো। সুতরাং, তোমার খারাপ কাজের জন্য তুমি নিজেই দায়ী। এর দায়ভার অন্য কারো নয়।"
  21. “পা তখনই অন্য পাকে অনুভব করে, যখন সেটা মাটিকে ছোঁয়।
  22. “পবিত্রতা কিংবা অপবিত্রতা নিজের উপর নির্ভর করে | কেউই অন্য কাউকে পবিত্র করতে পারেনা।”
  23. “ বর্ষাকালে এখানে, শীত-গ্রীষ্মে ওখানে বাস করবো – মূর্খরা এভাবেই চিন্তা করে। শুধু জানে না জীবন কখন কোথায় শেষ হয়ে যাবে।” 
  24. “সবচেয়ে অন্ধকার রাতের অর্থ অজ্ঞানতা।” 
  25. “জীবনে যতই ভালো বই পড় কিংবা ভালো উপদেশ শোনো না কেন, কিন্তু যতক্ষণ না তুমি সেইসবের থেকে পাওয়া তথ্যগুলোকে            নিজের জীবনে ব্যবহার না করছো; ততক্ষন অবধি সেইসবের কোনো মূল্যই নেই।” 
  26. “ আলস্য ও অতিভোজের দরুন স্থূলকায় নিদ্রালু হয়ে বিছানায় গড়াগড়ি দেয়া স্বভাবে পরিণত হলে সেই মূর্খের জীবনে দুঃখের পুনঃ    পুনরাবৃত্তি ঘটবে।” 
  27. ” প্রত্যেকটা দিনের গুরুত্ব বুঝুন, প্রত্যেকদিন একটা নতুন ব্যক্তির জন্ম একটি নতুন উদ্দেশ্যকে পূরণ করার জন্য হয়ে থাকে ৷ এই             কারণেই একদিনের গুরুত্বকে বোঝার চেষ্টা করুন৷
  28. “সত্যের পথে চলার সময় মানুষ মাত্র দুটো ভুলই করতে পারে – এক, সে হয়তো সেই পথকে পুরো শেষ করতে পারবেনা অথবা দুই, সে    হয়তো সেই পথে যাওয়ার কোনদিন চেষ্টাই করবেনা।” 
  29. “প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে, তার নিজের দুনিয়াকে স্বয়ং নিজে খোঁজার।” 
  30. “প্রত্যেক অভিজ্ঞতা কিছু না কিছু শেখায় | প্রত্যেক অভিজ্ঞতাই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা আমাদের ভুল থেকেই শিখি।”
  31. “তোমার কাছে যা কিছু আছে, সেগুলোকে কখনোই অন্যের কাছে বাড়িয়ে বলোনা আর অন্যকে দেখে ঈর্ষাও করোনা | যে অন্যদের        দেখে ঈর্ষা করে, সে কখনোই মানসিকভাবে শান্তি পাবেনা।” 
  32. “আমরা যখন কথা বলি, তখন সেইসময় আমাদের শব্দ গুলোকে ভালোভাবে নির্বাচন করা উচিত | কারণ এরফলে শ্রোতার উপর ভালো   কিংবা খারাপ প্রভাব পরতে পারে।” 
  33. “আমি কখনোই দেখিনা যে কি কি চলে গেছে, আমি সর্বদা দেখে আর কি করা বাকি আছে।”
  34. “নিষ্ক্রিয়তা হচ্ছে মৃত্যুর একটা ছোট রাস্তা | কঠোর পরিশ্রমই ভালো জীবনের রাস্তা হয়ে থাকে |”
  35. “নিশ্চিতভাবে যে ব্যক্তি বিরক্তিপূর্ণ চিন্তার থেকে মুক্ত থাকে, সেই শান্তি পেয়ে থাকে।” 
  36. “যখন আমরা মনের রূপান্তর ঘটাই, আর চিন্তাগুলো বিশুদ্ধ করি, তখন আমরা অন্যায় কাজ থেকে জীবনকে পরিশুদ্ধ করি।এর             মাধ্যমে খারাপ কাজের চিহ্নও মুঁছে যায়। একটা মোমবাতি যেমনভাবে আগুন ছাড়া নিজে জ্বলতে পারেনা, ঠিক সেইরকমই একটা          মানুষ আধ্যাত্মিক জীবন ছাড়া বাঁচতে পারেনা।” 
  37. “চলে যাওয়া সময় কখনোই ফিরে আসবেনা | আমরা অনেকসময় এটা ভাবি যে, আজ যেই কাজটা হচ্ছেনা সেটা কাল হয়ে যাবে | কিন্তু    বাস্তবে যেই সময় একবার চলে যায় সেটা আর কোনোদিনও আসবেনা।”
  38. “যখন আমরা মনের রূপান্তর ঘটাই, আর চিন্তাগুলো বিশুদ্ধ করি, তখন আমরা অন্যায় কাজ থেকে জীবনকে পরিশুদ্ধ করি। এর     মাধ্যমে খারাপ কাজের চিহ্নও মুঁছে যায়।” 
  39. “ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের সমন্বয়ই জীবন। কেবল একটি সঠিক মুহূর্ত পাল্টে দেয় একটি দিন। একটি সঠিক দিন পাল্টে দেয় একটি জীবন।        আর একটি জীবন পাল্টে দেয় গোটা বিশ্ব।”
  40. “একটা শুদ্ধ এবং নিস্বার্থ জীবনযাপন করার জন্য একটা ব্যক্তিকে, সবকিছুর মধ্যেও কিছুই নিজের না; এই ভাবনা রাখতে হবে।”
  41. “মা যেমন তার নিজ পুত্রকে নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করে তেমনি সকল প্রাণীর প্রতি অপরিমেয় মৈত্রী ভাব পোষণ করবে।”
  42. “তোমাদের সবাইকে সদয়, জ্ঞানী ও সঠিক মনের অধিকারী হতে হবে। যতই বিশুদ্ধ জীবনযাপন করবে, ততোই উপভোগ করতে            পারবে জীবনকে।”
  43. “ করুনাই বিশ্বের সবশ্রেষ্ট শক্তি৷"
  44. ”আমরা অনেকেই একটা কিছুর সন্ধানে পুরো জীবন কাটিয়ে দেই। কিন্তু তুমি যা চাও তা হয়তো এরইমধ্যে । সুতরাং, এবার থামো।” 
  45. “যে ভালোভাবে জীবন কাটিয়েছে, সে মৃত্যুকেও ভয় পায়না।” 
  46. “ কোনো কিছুই চিরন্তন নয়৷" 
  47. “ অতীত নিয়ে বিভ্রান্ত হয়োনা, ভবিষ্যতের স্বপ্নে হারিয়ে যেওনা, বর্তমানের দিকে মনোযোগ দেও, এটইে সুখী হওযার একমাত্র উপায়৷
  48. “নিষ্ক্রয়তা হচ্ছে মৃত্যুর একটি ছোটো রাস্তা৷ কঠোর পরিশ্রমই ভালো জীবনের রাস্তা হতে পারে।
  49. “সবকিছুকে বোঝার অর্থ সবকিছুকে ক্ষমা করে দেওয়া।"
  50. “সকলেই দণ্ডকে ভয় করে, জীবন সকলের প্রিয়। সুতরাং নিজের সাথে তুলনা করে কাকেও প্রহার করবে না কিংবা আঘাত করবে না।

 

শত্রু নিয়ে গৌতম বুদ্ধ বলেছেন:-

  1. “শুভর সূচনা করতে প্রত্যেক নতুন সকালই তোমার জন্য এক একটি সুযোগ।”
  2. “নিজেই নিজের ত্রাণ কর্তা। অন্য কেউ নয়। নিজেকে সুসংহত করতে পারলে মানুষ নিজের মধ্যেই দুর্লভ আশ্রয় লাভ করতে পারে।”
  3. “যা আপনি চিন্তা করবেন, তাই আপনি হবেন।”
  4. “সঠিক পথে পরিচালিত চিত্ত যতটুকু উপকার করতে পারে মাতা-পিতা বা আত্মীয় স্বজনও তা করতে পারে না।"
  5. “তোমার চিন্তাই তোমার শক্তির উৎস। নেতিবাচক চিন্তা তোমাকে অনেক বেশি আঘাত করে যা তোমার ধারণায় নেই।”
  6. ”যার সূচনা আছে তার সমাপ্তি আছে। এটা বুঝতে শিখলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।”
  7. “লক্ষ্যে বা গন্তব্যে পৌঁছানোর থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেই যাত্রাকে ভালোভাবে পূরণ করা হয়ে থাকে।” 
  8. " জগতে শক্রতার দ্বারা কখনো লক্রতার উপশম হয় না, মিত্রতাই দ্বারাই শক্রতার উপশম হয়।"

 

গৌতম বুদ্ধের অনুপ্রেরণামূলক উক্তি ও বাণী:-

  1. “নিজের কথার মূল্য দিতে হবে নিজেকেই। কেননা, তোমার নিজের কথার ওপর নির্ভর করবে অন্যের ভালো কাজ কিংবা মন্দ কাজ।”
  2. “অন্যের জন্য ভালো কিছু করতে পারাটাও তোমার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।” 
  3. “প্রতিদিন সকালে আমাদের নতুন করে জন্ম হয়৷ তাই আজ আমরা কি করছি, সেটাই সব থেকে বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।” 
  4. “নিজেকে বিজয়প্রাপ্ত করা, অন্যের উপর বিজয়প্রাপ্ত করার থেকে বড় কাজ হয়ে থাকে।” 
  5. “তুমিই কেবল তোমার রক্ষাকর্তা, অন্য কেউ নয়।” 

গৌতম বুদ্ধের ধর্মীয় উক্তি:-

গৌতম বুদ্ধের ধর্মের ব্যাপার উদারপন্থী ছিলেন। 

  1. “যিনি অস্থিরচিত্ত, যিনি সত্যধর্ম অবগত নন, যার মানসিক প্রসন্নতা নেই, তিনি কখনো প্রাজ্ঞ হতে পারেন না।” 
  2. “জ্ঞানী ব্যক্তির জয়, অজ্ঞানী ব্যক্তির পরাজয় ঘটে। ধর্মানুরাগী জয়ী হন কিন্তু ধর্ম হিংসাকারীর পরাজয় ঘটে।”
  3. ”যিনি যত অধিক ভাষণ করুন না কেন তাতে তিনি ধর্মধর হতে পারেন না। যিনি অল্পমাত্র ধর্মকথা শুনে নিজের জীবনে তা আচরণ          করেন এবং ধর্মে অপ্রমত্ত থাকেন তিনিই প্রকৃত ধর্মধর।” 

 

পাপ নিয়ে গৌতম বুদ্ধের বাণী :-

  • “কোনো পাপকেই ক্ষুদ্র মনে করো না। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাপই জমা হতে হতে মূর্খের পাপের ভান্ড পূর্ণ করে ফেলে।” 
  • “ জগতে মাতা ও পিতার সেবা সুখকর। শ্রমণ ও পণ্ডিতদের পরিচর্যা জগতে সুখ দায়ক। বার্ধক্য পর্যন্ত শীল (নীতি) পালন সুখকর।             শ্রদ্ধায় প্রতিষ্ঠিত হওয়াই সুখদায়ক। প্রজ্ঞালাভই সুখ জনক, পাপ না করাই সুখাবহ।”
  • “অল্প বুদ্ধি সম্পন্ন মূর্খেরা দুঃখদায়ক পাপ কাজের দ্বারা নিজেকে নিজের শক্রুতে পরিণত করে।” 
  • “ মা যেমন তাঁর নিজ পুত্রকে নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করে তেমনি সকল প্রাণীর প্রতি অপরিমেয় মৈত্রীভাব পোষণ করবে।”

 

সুখ ও শান্তি নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি:-

  1. “অনেক মোমবাতি জ্বালাতে আমরা কেবল একটি মোমবাতিই ব্যবহার করি। এর জন্য ওই মোমবাতিটির আলো মোটেও কমে না।            সুখের বিষয়টিও এমনই।”
  2. “চিন্তার প্রতিফলন ঘটে স্বভাব বা প্রকৃতিতে। যদি কেউ মন্দ অভিপ্রায় নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে দুঃখ তাকে অনুগমন করে। আর        কেউ যদি সুচিন্তা নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে সুখ তাকে ছায়ার মত অনুসরণ করে।”
  3. “সুখ কখনও আবিষ্কার করা যায় না। এটি সবসময় তোমার কাছে আছে এবং থাকবে। তোমাকে কেবল দেখার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।” 
  4. ”সুখের জন্ম হয় মনের গভীরে। এটি কখনও বাইরের কোনো উৎস থেকে আসে না।” 
  5. ”কোনো পরিবারকে সুখী ও স্বাস্থ্যবান হতে হলে সবার প্রথমে দরকার অনুশাসন এবং মনের উপর নিয়ন্ত্রণ। যদি কোনো ব্যক্তি নিজের      মনের উপর নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায়, তাহলে সে আত্মজ্ঞানের রাস্তা অবশ্যই খুঁজে পাবে৷''
  6. ”অতীত নিয়ে বিভ্রান্ত হয়োনা, ভবিষ্যতের স্বপ্নে হারিয়ে যেওনা, বর্তমানের দিকে মনোযোগ দেও। এটাই সুখী হওয়ার একমাত্র উপায়।” 
  7. ”একটা প্রদীপের মাধ্যমে হাজারটা প্রদীপকে জ্বালানো যেতে পারে কিন্তু তাতে সেই প্রদীপের আলো কখনোই কমে যায়না। ঠিক              সেইভাবেই খুশিকে সবার সবার মাঝে ছড়ানোর দ্বারা খুশি কখনোই কমে যায়না বরং বেড়ে যায়।”
  8. “শান্তি মনের ভেতর থেকে আসে, তাই সেটা ছাড়া শান্তির অনুসন্ধান করোনা।” 
  9. “আনন্দ হলো বিশুদ্ধ মনের সহচর। বিশুদ্ধ চিন্তাগুলো খুঁজে খুঁজে আলাদা করতে হবে। তাহলে সুখের দিশা তুমি পাবেই।” 
  10. “আরোগ্য পরম লাভ, সন্তুষ্টি পরম ধন, বিশ্বাস পরম জ্ঞাতি, নির্বাণ পরম সুখ।” 

 

প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি:-

  1. “যে ব্যক্তি মানুষকে ভালোবাসে, সে দুঃখের দ্বারা ঘিরে থাকে এবং যে কাউকে ভালোবাসেনা, তার কোনো সংকট নেই।”
  2. ”তুমি যদি সত্যিই নিজেকে ভালোবাসো, তাহলে তুমি কখনোই অন্যকে আঘাত দিতে পারবেনা।” 
  3. ”নিজের অপার ভালোবাসাকে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দাও।”
  4. ”ভালোবাসা হলো দুজনের পরিপূর্ণতার জন্য একজনের অন্তর থেকে অন্যকে দেওয়া এক উপহার।” 
  5. “গোটা দুনিয়া খুঁজে নাও। খুঁজে নাও সেই মানুষটাকে যে তোমার আবেগ ও ভালোবাসার উপযুক্ত। পাবে না। মনে রেখো, তোমার              আবেগ ভালোবাসা সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি তুমি নিজেই।” 
  6. “তোমার নিজেরও নিজের কাছে ঠিক ততটাই ভালোবাসা ও স্নেহ প্রাপ্য যতটা এই মহাবিশ্বে অন্য যে কারোর।” 
  7. ”প্রকৃত ভালোবাসার জন্ম হয় বোধশক্তি থেকে।” 
  8. “তুমি কতটা ভালোবাসা দিলে, কতটা পূর্ণতার সাথে জীবনকে উপভোগ করলে এবং কতটা গভীরতার সাথে হতাশাকে জীবন থেকে          ত্যাগ করলে- এই সবকিছুই সবশেষে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।” 
  9. ”গোটা দুনিয়া খুঁজে নাও। খুঁজে নাও সেই মানুষটাকে যে তোমার আবেগ ও ভালোবাসার উপযুক্ত। পাবে না। মনে রেখো, তোমার               আবেগ ভালোবাসা সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি তুমি নিজেই।”

 

◾বন্ধু নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি:-

  1. “নির্বোধ বন্ধু আদৌ কোনো বন্ধু নয়। নির্বোধ বন্ধু থাকার চেয়ে একা হওয়া অনেক ভালো।” 
  2. “কোনো হিংস্র পশু অপেক্ষা কোনো শয়তান বন্ধুকে আপনার বেশি ভয় পাওয়া উচিত। কারণ হিংস্র পশু আপনার শরীরের ক্ষতি              করতে পারে কিন্তু একজন খারাপ বন্ধু আপনার বুদ্ধির ক্ষতি করে দিতে পারে।” 
  3. “বন্ধু এমন একজন যিনি আপনার জীবন সম্পর্কে সমস্ত কিছু জানেন এবং এখনও আপনাকে ভালবাসেন।” 
  4. “আপনার প্রয়োজন থেকে নয় সবসময় আপনার হৃদয় থেকে আপনার বন্ধুদের ভালবাসুন।” 
  5. “জীবনে বহু মানুষ আসবে যাবে, কিন্তু একমাত্র প্রকৃত বন্ধুরাই হৃদয়ে ছাপ রেখে যাবে।” 
  6. “জীবনের সবথেকে মূল্যবান উপহার হলো একজন সৎ বন্ধু পাওয়া।” 
  7. “ভালো বন্ধু অনেকটা আকাশের তারার মতন, সবসময় দেখা না গেলেও তুমি জানো যে তারা সাথে আছে।” 
  8. “বন্ধুর সাথে অন্ধকার রাস্তায় চলা, আলোকজ্জ্বল রাস্তায় একা চলার থেকে অনেক ভালো।” 
  9. “একটি মিষ্টি বন্ধুত্ব আত্মাকে সতেজ করে তোলে।” 
  10. “সন্দেহের অভ্যাস সবচেয়ে ক্ষতিকারক, এটা মানুষকে দূষিত করে | সন্দেহ একটা ভালো বন্ধুত্ব ও ভালো সম্পর্কে ধ্বংস করে দেয়।”
     

রাগ নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি:-

  1. “তোমার রাগের জন্য তুমি শাস্তি পাবে না, তোমার রাগ দ্বারা তোমার শাস্তি হবে।”
  2. “রাগের সমান অগ্নি নেই। দ্বেষের সমান গ্রাসকারী নেই। মোহের সমান জাল নেই। তৃষ্ণার সমান নদী নেই। তাই রাগ-দ্বেষ-মোহ ও তৃষ্ণা    পরিত্যাগ করতে হবে।”
  3. “রণক্ষেত্রে সহস্রযোদ্ধার ওপর বিজয়ীর চেয়ে রাগ ক্রোধ বিজয়ী বা আত্মজয়ী বীরই বীরশ্রেষ্ঠ।” 
  4. “মৈত্রী দ্বারা ক্রোধকে জয় করবে, সাধুতার দ্বারা অসাধুকে জয় করবে, ত্যাগের দ্বারা ক্রোধকে জয় করবে ও সত্যের দ্বারা মিথ্যাকে জয়      করবে।” 
  5. “ক্রোধ সংবরণ কর। অহংকার পরিত্যাগ কর। সকল বন্ধন অতিক্রম কর।

 

◾সত্য নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি:-

  1. “যেকোনো অবস্থাতেই এই তিনটে জিনিসকে লোকানো কখনোই সম্ভব নয়, সেটা হলো- সূর্য,চন্দ্র এবং সত্য।”
  2. “ঘৃনাকে ঘৃনা দিয়ে কখনোই শেষ করা যাবেনা, ঘৃনাকে একমাত্র ভালোবাসার দাড়াই শেষ করা যেতে পারে | আর এটা একটা প্রাকৃতিক      সত্য।”
  3. “বাস্তব জীবনের সবচেয়ে বড় বিফলতা হলো, আমাদের অসত্যবাদী হয়ে থাকা।”
  4. “মাতা পিতা, স্ত্রী পুত্রের ভরণপোষন করবে।সত্য বিষয়ে জ্ঞান লাভ করবে। বিবিধ শিল্পশিক্ষা করবে।“
  5. ”একজন মানুষ যখন কথার পর কথা বলে তখন তাকে জ্ঞানী বলা হয় না ; তবে তিনি যদি শান্তিপূর্ণ , প্রেমময় এবং নির্ভীক হন তবে          সত্যই তাকে জ্ঞানী বলা হয় ।”

 

◾ব্যাথা, রাগ, দুঃখ নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি:-

  1. “জীবনে ব্যাথা থাকবেই, কিন্তু কষ্টকেই ভালোবাসতে শেখো।” 
  2. “কাউকে কটুকথা বলবে না, কারণ সেও কটু প্রতুত্তর দিতে পারে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় তোমার জন্যও কষ্টদায়ক হবে।দন্ডের প্রতিদন্ড       তোমাকেও স্পর্শ করবে।” 
  3. ”ভুলকে বার বার স্মরণ করা মানে মনের মধ্যে বড় বোঝা পুষে রাখা ।”

 

◾মন নিয়ে গৌতম বুদ্ধের উক্তি :-

  1. “ভালো কাজ সবসময় কর। বারবার কর। মনকে সবসময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখো। সদাচরণই স্বর্গসুখের পথ।”
  2. “সবকিছুর জন্য মনই আসল। সবার আগে মনকে উপযুক্ত করো, চিন্তাশীল হও। আগে ভাবো তুমি কী হতে চাও।”
  3. “অতীতে বাস করবেন না, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবেন না, বর্তমান মুহুর্তে মনকে কেন্দ্রীভূত করুন।” 
  4. “অনিয়ন্ত্রিত মন মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে। মনকে প্রশিক্ষিত করতে পারলে চিন্তাগুলোও তোমার দাসত্ব মেনে নেবে।” 
  5. “মন ও শরীরের পক্ষে সুস্থ থাকার রাস্তা হলো – অতীতের জন্য শোক না করা আর ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা না করা। বরং বুদ্ধি ও                সৎভাবের দ্বারা বর্তমানে বাঁচার চেষ্টা করা।”
  6. ”সব ধর্মের পূর্বগামী, মনই শ্রেষ্ঠ, সকলই মনোময়।”
  7. “একটি মানুষের মন তার প্রকৃত বন্ধু কিংবা শত্রু হয়ে থাকে।” 
  8. “আলোকিত হতে চাইলে প্রথমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করো।”

 

◾গৌতম বুদ্ধের উপদেশ বাণী :-

  1. “যিনি তোমার ক্রুটি প্রদর্শন করেন ও তজ্জন্য ভৎর্সনা করেন সেই মেধাবীকে গুপ্তনিধির ন্যায় জানবে৷"
  2. “সকলেই দণ্ডকে ভয় করে, জীবন সকলের প্রিয়। সুতরাং নিজের সাথে তুলনা করে কাউকে প্রহার করবে না কিংবা আঘাত করবে না ।”
  3. “যিনি উপদেশ দেন , অনুশাসন করেন এবং অসভ্যতা নিবারণ করেন তিনি অসতের অপ্রিয় এবং সৎলোকের প্রিয় হন।” 
  4. “ধৈর্য হলো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস | মনে রাখবে, একটা কলসি বিন্দু বিন্দু জলের দ্বারাই ভর্তি হয়।”
  5. “কাউকে কটুকথা বলবে না, কারণ সেও কটু প্রতুত্তর দিতে পারে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় তোমার জন্যও কষ্টদায়ক হবে।দন্ডের প্রতিদন্ড তোমাকেও স্পর্শ করবে।” 
  6. “তুমি যা ভাবো সেটাই হও, যা অনুভব করো সেটাই আকর্ষণ করো, যা কল্পনা করো তাই সৃষ্টি করো।”
  7. "আসক্তিই দুর্ভোগের মূল কারণ৷" ইত্যাদি 
     রাজপুত্র থেকে ফকির সন্ন্যাসীর জীবন-যাপন করা খুব একটি সহজ বিষয় ছিল না। সেই আসাধ্য সাধন করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ৷ তিনি   জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত সবই দেখেছেন৷ তিনি রাজকীয় বিলাস ভবন ছেড়ে সহজ সরল জীবনের পথে পা বাড়িয়েছেন৷ গৌতম বুদ্ধের      অমৃত বাণী ও উক্তি থেকে আমরা তাঁর জীবনবোধ সর্ম্পকে জানতে পারি৷ তাঁর অসাধারণ জীবনবোধ আমাদের চলার পথের পাথের৷

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment