logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

Biography Of Ishwar Chandra Vidyasagar In Bengali


-:ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের :-

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কে ছিলেন(Who is Ishwar Chandra Vidyasagar):-

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে 1839 সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar)।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম (Ishwar Chandra Vidyasagar’s Birthday) :-

 পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০(1820) সালের ২৬(26) শে সেপ্টেম্বর । পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । 

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পিতামাতা – Ishwar Chandra Vidyasagar’s Parents :-

পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা ভগবতী দেবী। দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তারা নিজেদের শিক্ষা, সংস্কার, আন্তরিকতা, কঠোরতা, দয়ালুতা ও নিষ্ঠার জন্য প্রচুর খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, যার কারণে তিনি অমর।

-:ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী:-

মহান মহান জ্ঞানী মানুষরা সমাজের উপর প্রভাব রেখে গেছেন। এইরকমই এক ব্যক্তিত্বের মানুষ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar)। যিনি খুব বিনয়ী ছিলন এবং নিজের জীবন দৃঢ়সংকল্প এবং উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষে কাটিয়ে ছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar) মহান সমাজ সংস্কারক, লেখক, শিক্ষক ও উদ্যোক্তা ছিলেন এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করে গেছেন অবিরাম। ভারতে শিক্ষার প্রতি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (Ishwar Chandra Vidyasagar) অবদান এবং নারীর অবস্থার পরিবর্তন জন্য তিনি চিরস্বরণীয়।

 তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।অন্যদিকে বিদ্যাসাগর মহাশয় ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারকও। বিধবা বিবাহ ও স্ত্রী শিক্ষার প্রচলন, বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক অভিশাপ দূরীকরণে তার অক্লান্ত সংগ্রাম আজও স্মরিত হয় যথোচিত শ্রদ্ধার সঙ্গে।

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্মজীবন:-

1841 সালের 29 শে ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে তিনি প্রধান পণ্ডিত হিসেবে যোগদান করেন এবং 1951  খ্রিস্টাব্দের 22 শে জানুয়ারি তিনি সংস্কৃত কলেজে নিযুক্ত হন। প্রথমে তিনি সহকারী সম্পাদকের পদ এবং পরবর্তীকালে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষের পদ লাভ করেন।সেই সঙ্গে স্কুল পরিদর্শকের অতিরিক্ত কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন।

কিছুকাল পরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতভেদ হওয়ায় তিনি কর্ম ত্যাগ করে বৃহত্তর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেন। এই সময় তিনি কঠোর পরিশ্রম করে মেট্রোপলিটন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শিক্ষা সংস্কার:-

ঈশ্বরচন্দ্র বাঙালিদের অশিক্ষার তপসা থেকে জ্যোতির্ময় আলোতে আনতে চেয়েছিলেন। জাতিকে তিনি মুক্তি ও বিচারবোধে উদ্দীপ্ত করতে চেয়েছিলেন। সেই জন্য প্রয়োজন ছিল উপযুক্ত শিক্ষার। সংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠনের রিপোর্টে বিদ্যাসাগর তাঁর  শিক্ষানীতিকে দৃঢ় করতে চেয়েছিলেন। কৃষিজীবী বয়স্ক মানুষের জন্য তিনি কার্মাটারে নাইট স্কুল খোলেন। মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনকে  তিনি বৃহৎ বেসরকারি কলেজে পরিণত করেন ।

হার্ডিঞ্জের পরিকল্পনামতো তিনি ১০১(101) টি বঙ্গ বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের জন্য তিনি সব থেকে বেশি প্রয়াসী হয়েছিলেন। এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন ,জড়তাগ্রস্ত সমাজের পক্ষে পাশ্চাত্য শিক্ষার গুরুত্ব কতখানি তিনি তা উপলব্ধি করেছিলেন ।শিক্ষা বিস্তারে তার অদম্য উৎসাহের মূলে ছিল তাঁর সেই উপলব্ধি ।

শিক্ষাবিস্তারই  ছিল তাঁর সমাজসংস্কারের প্রাথমিক সোপান। কেবল পুরুষদের মধ্যেই  নয় , নারী সমাজে ও শিক্ষাবিস্তারের জন্য  ছিল তাঁর সমান উৎসাহ ।বহু বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন ছিল তাঁর অবিস্মরণীয় কীর্তি । শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি যে প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির স্বাক্ষর রেখে গেছেন তা সেকালের এক ব্রাহ্ম সন্তানের পক্ষে সত্যিই বিস্ময়কর ।

  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমাজ সংস্কারক:-

মাতা ভগবতীর প্রতি শ্রদ্ধাই তাঁকে নারীমুক্তি আন্দোলনে নিয়োজিত করেছিল। রামমোহন সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নারীদের প্রতি যে শ্রদ্ধা দেখিয়েছিলেন ,বিদ্যাসাগর সেই পথেই বিধবা বিবাহ আন্দোলন শুরু করেছিলেন-শাস্ত্রীয় নিয়মের দোহাই দিয়ে সমাজপতিদের বোঝাতে চেয়েছিলেন বিধবা বিবাহ শাস্ত্রসম্মত।

১৮৫৬ (1856) সালের ২৬(26)শে জুলাই, বিদ্যাসাগর ‘বিধবা বিবাহ আইন’ পাস করিয়ে নেন ।এখানেই তিনি থেমে থাকেননি; নিজের খরচে তিনি এক একটি করে বিধবা বিবাহ দিয়েছিলেন এবং সেই জন্য তাঁর ব্যক্তিগত ঋণ একসময় বিরাশি হাজার টাকায় পৌঁছে গিয়েছিল। এছাড়াও তিনি পুরুষের বহুবিবাহ রদ করতেও সচেষ্ট হয়েছিলেন। বাল্যবিবাহ নিবারণও ছিল তাঁর অন্যতম প্রধান কীর্তি।

  • দয়ার সাগর:-

তিনি শুধু বিদ্যাসাগর ই ছিলেন না ,তিনি ছিলেন দয়ার সাগর, করুণার সাগর ।শ্রী রামকৃষ্ণ তাঁকে ‘দয়ার সাগর” বলে অভিহিত করেছিলেন। পরদুঃখো কাতরতা তাঁকে দীন- দুঃখীর চোখের জল মোছাতে সচেষ্ট করেছিল।মায়ের কথাতেই তিনি গ্রামের মানুষের জন্য অন্নসত্র খুলেছিলেন ,শীতার্ত মানুষকে গরম বস্ত্র  দান করেছিলেন ও বহু দাতব্য চিকিৎসালয়ও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

প্রবাসী কবি মধুসূদনকে চরম আর্থিক অনটনের হাত থেকে তিনি রক্ষা করেছিলেন ।দেশাচার ছাড়াও লোকাচারের ঊর্ধ্বে  মানবিকতাকে তিনি মূল্য দিয়েছিলেন বেশি ।এই পৃথিবীতে তিনি সাধারণ অবহেলিত মানুষদের বসবাসযোগ্য করে যাওয়ার মন্ত্রে ব্রতী হয়েছিলেন ।  বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্তি একটি প্রবাদের মর্যাদা লাভ করেছিল ।তিনি মায়ের ডাকে বিপৎসংকুল দামোদর নদ সাঁতার কেটে পার করেছিলেন । এই মাতৃভক্তি ই তাঁকে সকল বাধা বিঘ্ন তুচ্ছ করে পরের দুঃখো মোচনের প্রেরণা দান করেছিল।

  • সাহিত্যকীর্তি:-

বাংলা সাহিত্য বিদ্যাসাগরের প্রতিভার কাছে গভীরভাবে  ঋণী । ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি” ‘বর্ণপরিচয়’, ‘সীতার বনবাস’, ‘শকুন্তলা’, ‘ভ্রান্তিবিলাস” প্রভৃতি গ্রন্থ ছিল প্রবাহমান স্বতঃস্ফূর্ত গদ্যের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত । ‘বর্ণপরিচয়’ এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি সাধারণ বাঙালির ‘হাতেখড়ি’  হয়েছে বললেও অত্যুক্তি হবে না।এছাড়াও তিনি সমাজ সংস্কারমূলক বহু সাহিত্যের রচয়িতা।

লঘু রচনার মধ্যে ‘অতি অল্প হইল’, ‘আবার অতি অল্প হইল’ ইত্যাদি দৃষ্টি আকর্ষণীয়। মৌলিক রচনা হিসেবে ‘প্রভাবতী সম্ভাষণ ‘ যা বিদ্যাসাগর রচনা করেছিলেন  তাঁর  বন্ধু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র কন্যার মৃত্যুতে ছিল একটি মনোগ্রাহী সাহিত্যিক নিদর্শন।  

  • জাতীয়তাবোধ:-

বর্তমান মেরুদণ্ডহীন বাঙ্গালি জাতির কাছে বিদ্যাসাগর ছিলেন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন স্বদেশপ্রেমিক। জাতিরও দেশের কল্যাণে তিনি  নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহ দমন করার জন্য ইংরেজরা সংস্কৃত কলেজে অস্থায়ী আস্তানা স্থাপন করতে চাইলে বিদ্যাসাগর মশাই তাঁর প্রতিবাদ করেন।জাতীয় কংগ্রেসকে তিনি সশস্ত্র আন্দোলনে রূপায়িত করার স্বপ্ন দেখতেন। মা ও দেশের মাটির প্রতি তাঁর টান ছিল সহজাত।

  • সম্মান ও স্বীকৃতি :-

১৮৮০ সালের ১ জানুয়ারি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে সিআইই উপাধিতে ভূষিত করা হয়  ।১৮৮৩ সালে বিদ্যাসাগর মহাশয় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন ।
  • মৃত্যু :-

 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্বন্ধে মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন— “ আমি যে দরিদ্র বাঙালী বাহ্মণকে শ্রদ্ধা করি তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । এই মহামতি বিদ্যাসাগর ১৮৯১ সালের ২৯ শে জুলাই পরলােকগমন করেন । তখন তার বয়স হয়েছিলাে ৭১ বছর । 

শেষ কথা

  • মধু কবি বিদ্যাসাগর দয়া দক্ষিন্য নিজের জীবনে অনুভব করতে পেরেছিলো; তাইতো তিনি একসময় এগিয়েছিলেন, "বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত করুনা সিধু তুমি, সেই জানে মনে,দীন যে দীনের বন্ধু"
  • আশাকরি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে ।কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট( Comment) করে জানাতে পারেন।                                                                                                                                       -ধন্যবাদ

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment