পরিবেশগত নিরীক্ষায় ব্যবহৃত প্রধান কৌশল এবং পদ্ধতিগুলি নিম্নরূপ:
1. ডকুমেন্ট পর্যালোচনা (Document Review)
- পরিবেশগত নীতিমালা: প্রতিষ্ঠানের পরিবেশগত নীতিমালা ও পরিকল্পনা পর্যালোচনা।
- আইন ও বিধিমালা: প্রাসঙ্গিক পরিবেশগত আইন, বিধিমালা এবং মানদণ্ডের সাথে প্রতিষ্ঠানের নীতি ও কার্যক্রমের সম্মতি যাচাই।
- রিপোর্ট ও রেকর্ড: পূর্ববর্তী নিরীক্ষা রিপোর্ট, পরিদর্শন রিপোর্ট, পরিবেশগত মূল্যায়ন রিপোর্ট এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ।
2. সাইট পরিদর্শন (Site Inspection)
- পরিবেশগত পরিস্থিতি মূল্যায়ন: প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের পরিবেশগত প্রভাব সরাসরি পর্যবেক্ষণ।
- পরিদর্শন চেকলিস্ট: নির্দিষ্ট চেকলিস্টের মাধ্যমে সাইট পরিদর্শন করে পরিবেশগত মানদণ্ড যাচাই।
- ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি: সাইটের পরিস্থিতি ডকুমেন্ট করার জন্য ছবি ও ভিডিও গ্রহণ।
3. সাক্ষাৎকার এবং আলোচনা (Interviews and Discussions)
- কর্মচারী সাক্ষাৎকার: প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সাথে সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা সংগ্রহ।
- স্টেকহোল্ডার আলোচনা: স্থানীয় সম্প্রদায়, এনজিও এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে তাদের মতামত ও উদ্বেগ সংগ্রহ।
4. পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ (Measurements and Monitoring)
- পরিবেশগত পরামিতি: পানি, বায়ু, মাটি, শব্দ এবং অন্যান্য পরিবেশগত পরামিতির সরাসরি পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ।
- মনিটরিং যন্ত্রপাতি: পরিবেশগত মনিটরিং যন্ত্রপাতি, যেমন এয়ার কোয়ালিটি মনিটর, ওয়াটার কোয়ালিটি টেস্টার ইত্যাদি ব্যবহার।
5. ডেটা বিশ্লেষণ (Data Analysis)
- পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ: সংগ্রহিত ডেটা পরিসংখ্যানগত পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করে ফলাফল তৈরি।
- প্রভাব মূল্যায়ন মডেল: পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের জন্য নির্দিষ্ট মডেল এবং সফটওয়্যার ব্যবহার।
6. রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (Risk Assessment)
- ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ: প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সম্ভাব্য পরিবেশগত ঝুঁকি চিহ্নিত করা।
- ঝুঁকি মূল্যায়ন পদ্ধতি: ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য HAZOP (Hazard and Operability Study), FMEA (Failure Modes and Effects Analysis) ইত্যাদি পদ্ধতি ব্যবহার।
7. সিস্টেম অডিট (System Audit)
- EMS অডিট: পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা (EMS) নিরীক্ষা করে এর কার্যকারিতা মূল্যায়ন।
- ISO মানদণ্ড: ISO 14001 এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে সিস্টেম অডিট পরিচালনা।
8. বেঞ্চমার্কিং (Benchmarking)
- উন্নত অনুশীলন: প্রতিষ্ঠানের পরিবেশগত কর্মক্ষমতা তুলনামূলকভাবে মূল্যায়ন করা এবং সেরা অনুশীলন অনুসরণ করা।
- তুলনামূলক বিশ্লেষণ: অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে পরিবেশগত কর্মক্ষমতা উন্নয়ন।
9. ফলো-আপ এবং মনিটরিং (Follow-up and Monitoring)
- পরিকল্পনা বাস্তবায়ন: নিরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পরিবেশগত পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ বাস্তবায়ন।
- নিয়মিত মনিটরিং: পরিবেশগত কর্মক্ষমতা নিয়মিত মনিটরিং এবং রিপোর্টিং।
10. প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা (Training and Awareness)
- কর্মচারী প্রশিক্ষণ: কর্মচারীদের পরিবেশগত নীতি, প্রক্রিয়া এবং নিয়মাবলী সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান।
- সচেতনতা কার্যক্রম: পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মসূচি ও প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা।
সারসংক্ষেপ:
পরিবেশগত নিরীক্ষা প্রক্রিয়ায় ডকুমেন্ট পর্যালোচনা, সাইট পরিদর্শন, সাক্ষাৎকার ও আলোচনা, পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ, ডেটা বিশ্লেষণ, রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট, সিস্টেম অডিট, বেঞ্চমার্কিং, ফলো-আপ এবং মনিটরিং, এবং প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা এসব কৌশল এবং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিগুলি একত্রে পরিবেশগত কার্যক্রমের সার্বিক মূল্যায়ন এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়।