logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

মাস্টারদা সূর্য সেনের জীবনী!


ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ হয়েছিলেন বাংলার শত শত বীর সন্তান এবং তাঁদের মধ্যেই একজন অন্যতম বীর বাঙালি সন্তান হলেন মাস্টারদা সূর্য সেন (সূর্যকুমার সেন)। 

মাস্টারদা সূর্য সেনের জন্ম ও শৈশব জীবন:

22শে মার্চ 1894সালে বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামে অবস্থিত রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন মাস্টার দা সূর্য সেন। তাঁর পরিবারটি অর্থনৈতিক খুব একটি ভালো ছিল না। তিনি তাঁর পিতা রাজমনি সেন ও মাতা শশী বালা সেনের ছটি সন্তানের মধ্যে চতুর্থ সন্তান ছিলেন। তাঁরা মোট দুই ভাই ও চার বোন ছিলেন। মাস্টার দা সূর্য খুব অল্প বয়সেই তাঁর মাতা-পিতাকে হারান ফলে তিনি তাঁর কাকা গৌরমনি সেনের কাছেই মানুষ হন।

মাস্টারদা সূর্য সেনের শিক্ষা জীবন:

ছোট বেলা থেকেই সূর্য সেন পড়াশোনার দিকে পারদর্শী ছিলেন। তিনি দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি হরিশদত্তের ন্যাশনাল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাশ করে তত কালীন বাংলার বিখ্যাত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন। এখানে তিনি এফ. এ. পাশ করে ও বি.এ-তে ভর্তি হন। তবে বেশ কিছু কারণে তাঁকে এই কলেজ থেকে বিতাড়িত করা হয়। ফলে, তাঁকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত মুর্শিদাবাদ জেলার বিখ্যাত একটি মহাবিদ্যালয় বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে থেকে তাঁর বি.এ কমপ্লিট করতে হয়।

মাস্টারদা সূর্য সেনের কর্ম জীবন ও বিবাহ:

বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.এ কমপ্লিট করার পর তিনি চট্টগ্রামে ফিরে এসে হরিশদত্তের ন্যাশনাল স্কুলেই শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের ফলে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায় ফলে তিনি উমাতারা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন।

বিপ্লবী ভাবধারার কারণে মাস্টার দা সূর্য সেন বিবাহ করার পক্ষে ছিলেন না। তবে চন্দ্রনাথ সেন ও অন্যান্য আত্মীয়দের চাপে তিনি 1919 সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ার নগেন্দ্রনাথ দত্তের ষোল বছরের কন্যা পুষ্পকুন্তলা দত্তকে বিয়ে করেন। তবে তিনি তাঁর বিবাহের তিন দিন পরেই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসেন। 1926 সালে তাঁর স্ত্রী টাইফয়েড রোগে মারা যান।

মাস্টারদা সূর্য সেনের বিপ্লবী জীবন:

বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়াশোনা করার দরুন তিনি যুগান্তর দলের সদস্য অধ্যাপক সতীশচন্দ্র চক্রবর্তীর সন্নিকটে আসেন এবং বিপ্লবি ভাবধারার সঙ্গে যুক্ত হন। এর পর 1918 সালে চট্টগ্রামে ফিরে এসে তিনি অনুরূপ সেন, চারুবিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, নগেন্দ্রনাথ সেন প্রমুখদের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামে গোপন বিপ্লবী দল গঠন করেন। শিক্ষকতার সাথে যুক্ত থাকার কারণে তাঁকে অন্যান্য বিপ্লবীরা মাস্টার দা নাম দেন।

তাঁর বিপ্লবী জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ঃ

নাগরখানা পাহাড় খন্ডযুদ্ধ: 13ই ডিসেম্বর 1923সালে টাইগার পাস এর মোড়ে সূর্য সেনের গুপ্ত সমিতির সদস্যরা পাহাড়তলীতে অবস্থিত আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকদের বেতনের 17,000টাকার বস্তা ছিনতাই করে ছিলেন। এবং এই ঘটনার কারণে কিছু দিন পরে গুপ্ত সমিতির গোপন বৈঠক চলাকালীন সেখানে পুলিশ চলে আসে এবং গুপ্ত সমিতির সদস্য ও পুলিশের মধ্যে খন্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যাই। এই ঘটনাটিই “নাগরখানা পাহাড় খন্ডযুদ্ধ” নামে পরিচিত।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন: বিদ্রোহকে আরো তীব্র করার জন্য মাস্টার দা সূর্য সেন ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চিটাগাং ব্রাঞ্চ গঠন করেন এবং ঠিক করা হয় যে 18ই এপ্রিল 1930 সালে চারটি দল মিলে ইংরেজদের ওপর আক্রমণ করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী একদল বিপ্লবী রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে নেয়। এর ফলে চট্টগ্রাম সমগ্র ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য একটি দল চট্টগ্রামের নন্দনকাননে টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ অফিসে আক্রমণ করে সব যন্ত্রপাতি ভেঙ্গে দেয় এবং সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আরেকটি দল পাহাড়তলীতে অবস্থিত চট্টগ্রাম রেলওয়ে অস্ত্রাগার দখল করে সেখান থেকে উন্নতমানের রিভলবার ও রাইফেল লুন্ঠন করে নেয়। এবং একদল বিপ্লবীরা দামপাড়ায় পুলিশ রিজার্ভ ব্যারাক দখল করে নেয়। এই ঘটনা গুলির কারণে চট্টগ্রাম প্রায় চার দিনের জন্য ইংরেজ মুক্ত হয়ে যায়।

জালালাবাদ যুদ্ধ: 22শে এপ্রিল 1930সালে বিপ্লবীরা যখন জালালাবাদ পাহাড়ে অবস্থান করছিল তখন সশস্ত্র ইংরেজ সৈন্যরা তাদের ওপর আক্রমণ করে দেয়। এবং দুই ঘণ্টার যুদ্ধের পর ব্রিটিশ বাহিনীর 100জন এবং বিপ্লবী বাহিনীর 12জন শহীদ হন। এই ঘটনাটিই “জালালাবাদ যুদ্ধ” নামে পরিচিত।

মাস্টারদা সূর্য সেনের শেষ জীবন:

আগ্নেয়াস্ত্র বহন করার কারণে মাস্টার দা সূর্য সেন কে 14ই আগস্ট 1933 সালে প্রাণদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। এর পর 1934 সালের 12th জানুয়ারি মধ্যরাতে সূর্য সেনকে ফাঁসী দেওয়া হয়।

-ধন্যবাদ

Popular Post:

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment