logo CBCE Skill INDIA

Welcome to CBCE Skill INDIA. An ISO 9001:2015 Certified Autonomous Body | Best Quality Computer and Skills Training Provider Organization. Established Under Indian Trust Act 1882, Govt. of India. Identity No. - IV-190200628, and registered under NITI Aayog Govt. of India. Identity No. - WB/2023/0344555. Also registered under Ministry of Micro, Small & Medium Enterprises - MSME (Govt. of India). Registration Number - UDYAM-WB-06-0031863

রাজা রামমোহন রায়-এর জীবনী!


 রাজা রামমােহন রায় ভারতে নব যুগের প্রবর্তক স্বদেশ ভারতবর্ষ এবং স্বজাতির কল্যাণে তার অবদান অবিস্মরণীয়। রাজা রামমোহন রায়ের জীবনাদর্শ একদা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতিকে অপরিসীম অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলাে। রাজা রামমোহন রায়কে মহান পুরুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়  প্রতিভা , পান্ডিত্য , মনীষা ও কর্মকুশলতার প্রতীক রামমােহন রায় ছিলেন নবীন ভারতের নবজাগরণের পথিকৃৎ।ভারতের নব যুগের প্রবর্তক রাজা রামমোহন রায়ের একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী। রাজা রামমোহন রায় জীবনী বা জীবন কথা নিয়ে বা জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

রাজা রামমোহন রায়:

রাজা রামমােহন রায় ছিলেন প্রথম ভারতীয় ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালি দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্মীয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায়ের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে  পেরেছিলেন। রাজা রামমোহন রায় সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন, সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য। তখন হিন্দু বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে যেতে বা আত্মাহুতি দিতে বাধ্য করা হত।

রাজা রামমোহন রায়ের জন্ম:

রাজা রামমােহন রায় 1774 খ্রীষ্টাব্দের 10ই মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জমিদার রামকান্ত রায়। মাতার নাম তারিণী দেবী। 

রামমোহন রায়ের শিক্ষাজীবন:

ছােটবেলা থেকেইরামমােহন রায় -এর লেখাপড়ার প্রতি ছিলাে প্রবল আগ্রহ। তিনি আট বছর বয়সে গ্রামের স্কুলে বাংলা এবং আরবীভাষা শিক্ষা করেন। তারপর পাটনায় গিয়ে আরবী ও ফারসি দুটো ভাষাতেইবুৎপত্তিঅর্জন করেন। বারাে বছর বয়সে তিনি সংস্কৃত , ভাষা শেখার জন্য কাশীধামে যান এবং চার বছর সেখানে পড়াশুনা করেন। এছাড়া তিনি বেদান্ত শাস্ত্রের উপরেও গবেষণা করেন। 

রামমােহন হিন্দুধর্মের সাকার উপাসনা পদ্ধতির বিরােধী:

রামমােহন হিন্দুধর্মের সাকার উপাসনা পদ্ধতির বিরােধী ছিলেন। তিনি মুর্তিপূজা মানতেন না। তিনি হিন্দুদের পৌত্তলিক ধর্মপ্রণালী নামে একটি বইও রচনা করেন। এই বই পড়ে এবং নানা কারণে রামমােহনের পিতা পুত্রের উপর ক্ষুব্ধ হন এবং বাড়ি থেকে বের করে দেন। রামমােহন তিব্বতে চলে যান ঘুরতে ঘুরতে। তিব্বতে কয়েক বছর থেকে আবার ভারতে ফিরে আসেন। শিক্ষা করেন ইংরেজী ভাষা। এভাবে মাত্র তেইশ বছর বয়সের মধ্যে তিনি দশটি ভাষা শিখে ফেলেন। রামমােহন রায় বাংলা , ইংরেজী , আরবী ছাড়াও গ্রীক , হিব্রু , ল্যাটিন , ফারসী এবং উর্দু ভাষাতে লিখতে পড়তে পারতেন।

রামমোহন রায়ের কর্মজীবন:

শিক্ষাজীবন শেষ করে রামমােহন রংপুরের ডেপুটি কালেক্টর। ডিগবিসাহেবের আমন্ত্রণে রাজস্ব বিভাগে এক উচ্চপদে চাকরি গ্রহণ করেন। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি দেওয়ানি পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিন্তু রামমােহন রায় চাকরি বেশিদিন করেননি। তিনি সাহিত্য সাধনাও সমাজ সংস্কার কাজের জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়ে মুর্শিদাবাদে চলে আসেন। পরে কলকাতার মানিকতলায় বাড়ি কিনে সেখানেই বসবাস করতে থাকেন  এই মানিকতলার বাড়িতেই তিনি আত্মীয় সভা নামে একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। কিছুকালের মধ্যে তিনি বাংলায় ব্রাহ্মণ পত্রিকা এবং ইংরেজীতে ইষ্ট ইন্ডিয়া গেজেট ’ নামে দুটো পত্রিকা বের করেন। 

রামমোহন রায়ের ব্রহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা : 

 ১৮২৭ সালে তিনি ধর্ম সমালােচনামূলক প্রতিষ্ঠান ব্রহ্মসভা ’ প্রতিষ্ঠা করেন। ব্রহ্মসভার মাধ্যমেই রামমােহন তার নতুন ধর্ম মতবাদ প্রচার করেন । তিনি বেদে বর্ণিত অদ্বিতীয় ব্রহ্মের উল্লেখ করে প্রচার করেন যে , ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়। তিনিই বেদের ব্রহ্ম। তিনি অদ্বিতীয় এবং নিরাকার। এইব্রহ্মের যারা উপাসকতারা হলেন ব্রাহ্ম। রামমােহন প্রবর্তিত এই মতবাদ সেকালে বিশেষ আলােড়ন সৃষ্টিকরেছিলাে। আজো ব্রাহ্মধর্ম মতবাদের প্রচুর অনুসারী আছে বাংলাদেশে ও পশ্চিমবঙ্গে। 

রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা:

রামমােহন হিন্দুধর্মের বর্বর সতীদাহ প্রথায় খুব মর্মাহত হন। সেকালে হিন্দুধর্মের কোনাে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকেও স্বামীর সাথে জ্বলন্ত চিতায় আত্মাহুতি দিতে হতাে। একে বলা হতাে সহমরণ প্রথা। স্বামীর চিতায় আত্মহুতি দিয়ে সতী হওয়া । হিন্দুধর্মের এই অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে রামমােহন প্রবল আন্দোলন গড়ে তােলেন। পরে 1829 খ্রীষ্টাব্দে তৎকালীন বৃটিশ ভারতের বড়লাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক – এর সহায়তায় সতীদাহ প্রথা রহিতকরণ আইন। পাস করাতে সক্ষম হন।

এভাবেই হিন্দুসমাজে ধর্মের নামে যুগ – যুগ ধরে প্রচলিত কুখ্যাত বর্বরসতীদাহ প্রথার বিলুপ্তি ঘটে। শুধুসতীদাহ প্রথা নয় , তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে বাল্যবিবাহ , কন্যাপণ এবং গঙ্গায় সন্তান নিক্ষেপের ( বিসর্জনের ) মতাে আরাে কিছু সামাজিক কুপ্রথাও বন্ধ হয়।

রামমোহন রায়ের রাজা উপাধি:

রামমােহনের জীবনের আরেকটি উল্লেখযােগ্য ঘটনা হলাে বৃটিশ কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত মােঘল বাদশাহ দ্বিতীয় আকবর শাহ – এর বৃত্তি বৃদ্ধির জন্য বিলেত গমন। তিনি বাদশাহ দ্বিতীয় আকবরের প্রতিনিধি রূপে বিলেত গমন করে পার্লামেন্টে বাদশাহর পক্ষে বক্তৃতা দিয়ে বাদশাহর বৃত্তির অংক বৃদ্ধি করাতে সক্ষম হন। বিলেতে যাবার আগে। বাদশা রামমােহনকে রাজা উপাধিতে ভূষিত করেন। 

রামমোহন রায়ের মৃত্যু: 

1833খ্রীষ্টাব্দের 27শে সেপ্টেম্বর রাজা রামমােহন রায় ইংল্যান্ডের ব্রিষ্টল শহরে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ব্রিষ্টল নাগরীর স্টেপলটন গ্লোভে সমাহিত করা হয়। পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ব্রিষ্টলে গিয়ে তার পবিত্র দেহউক্ত স্থান থেকে সরিয়ে ‘ আরনােজভেল’ নামকস্থানে সমাহিত করেন। 

-ধন্যবাদ

Popular Post:

Give us your feedback!

Your email address will not be published. Required fields are marked *
0 Comments Write Comment