ভারতে বিদেশনীতির মূল উপাদানসমূহ
বিদেশনীতি কোনো একটিমাত্র উপাদান নিয়ে গড়ে ওঠে না। ভারতের বিদেশনীতির অনেকগুলি উপাদান রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
পঞ্চশীল ও জোটনিরপেক্ষতার নীতি:
- স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর পঞ্চশীল ও জোটনিরপেক্ষতা ছিল ভারতের বিদেশনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। ঠান্ডা লড়াইয়ের সেই যুগে ভারতের এই দুটি উপাদানের পুরুত্ব আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বীকৃতি অর্জন করেছিল। যে- কোনো দেশের বিদেশনীতি সময় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বদলের সঙ্গে বদলে যায়। ভারতও সেদিক থেকে কোনো ব্যতিক্রম নয়। তবুও আধুনিক ভারতের বিদেশনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে পঞ্চশীল ও জোটনিরপেক্ষতার নীতির অবদানকে একেবারে উপেক্ষা করা যায় না।
জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের সমর্থন এবং উপনিবেশবাদ ও নয়া উপনিবেশবাদের বিরোধিতা:
- ভারতের বিদেশনীতির অন্যতম মূল উপাদান হল জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে সমর্থন এবং উপনিবেশবাদ ও নয়া উপনিবেশবাদের বিরোধিতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে স্বাধীনতার জন্য যে মুক্তি আন্দোলন গড়ে ওঠে ভারত তাতে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। এর পাশাপাশি বৃহৎ শক্তিগুলির উপনিবেশবাদী ও নয়া উপনিবেশবাদী পদক্ষেপের কড়া বিরোধিতা করে ভারত।
শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ মীমাংসা ও যুদ্ধ পরিহার:
- ভারত বরাবরই যে-কোনো ধরনের বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিটিয়ে ফেলার পক্ষপাতী। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যেসব সংকট দেখা দিয়েছে ভারত তার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার পক্ষে সওয়াল করেছে।
প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সপ্তন ও সম্প্রীতি রক্ষা:
- ভারত বরাবর প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্ভাব ও সম্প্রীতি বজায় রেখে চলতে চেয়েছে। এটি ভারতের বিদেশনীতির একটি অন্যতম মৌলিক উপাদান। 5 সামরিক হস্তক্ষেপ ও সামরিক আগ্রাসনের বিরোধিতা: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা ভারতের একটি ঘোষিত নীতি। এই নীতির প্রশ্নে ভারত কখনও আপস করেনি। তাই বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ বা সামরিক আগ্রাসনকে ভারত মেনে নেয়নি। ঠান্ডা লড়াই পরবর্তী যুগে একবিংশ শতাব্দীতে ইরাকের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের যৌথ বাহিনীর সামরিক আগ্রাসনকেও অনুমোদন করেনি ভারত। ভারতীয় সংসদ এই ব্যাপারে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে তার স্পষ্ট অভিমত সারা বিশ্বের কাছে ঘোষণা করে দিয়েছিল।
-ধন্যবাদ